‘ঝাড়ুদার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টও হতে পারবে না তারেক’
২৮ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৪৮ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২০ ২২:৫৫
সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানার সন্তানদের তুলনায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান কোনো যোগ্যতাই ধারণ করেন না বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।
তিনি বলেন, তুলনা করতেও খারাপ লাগে। তারপরও বলতে হয়— জয়, পুতুল, ববি, টিউলিপ— এদের প্রত্যেকের নিজস্ব যোগ্যতা আছে। টিউলিপ তো ব্রিটিশ সংসদে তৃতীয়বারের মতো এমপি হয়েছে। তারেক রহমান ওইখানে পালিয়ে না থেকে নাগরিকত্ব নিয়ে একটু চেষ্টা করে দেখুক ঝাড়ুদার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হতে পারে কি না। সেটা হতে পারবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। কারণ সে যে ধরনের অপরাধী, ক্যাসিনো তার আয়ের উৎস। ওই দেশের লোক সে কারণে তাকে ভোটই দেবে না।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য এ কথা বলেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, টিউলিপের পথটা ফুলের বিছানা ছিল না। একটা একটা করে ডিগ্রি নেয়, আবার কিছুদিন চাকরি করে। তারা (সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, টিউলিপ সিদ্দিকী, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকী ববি) একদিকে শিক্ষিত, মার্জিত, আলোকিত মানুষ। আরেক দিকে তারেক রহমান দস্যুতা, বিকৃতি ও মানুষ হত্যার মানসিকতা নিয়ে চলে। তাই তুলনা করতেও খুব খারাপ লাগে।
তিনি আরও বলেন, নামার ব্যাপারে তারা (তারেক রহমান) অত্যন্ত পারদর্শী। ওঠার ব্যাপারের তাদের কোনো যোগ্যতা নেই, ইচ্ছাও নেই, স্বপ্নও নেই। কই, শেখ হাসিনার ছেলের তো কোনো ভবন নেই? হাওয়া ভবন কার ভবন? বেগম জিয়ার সন্তানের ভবন। খাওয়া ভবনও ওই একই ভবন, খোয়াব ভবনও একই ভবন। সঙ্গে রয়েছে খাম্বার কাহিনী।
ক্যাসিনোর প্রবক্তা জিয়াউর রহমান
বিএনপি সদস্যরা অবৈধভাবে ক্যাসিনো পরিচালনা নিয়ে কথা বললেও দলটির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই দেশে ক্যাসিনো চালু করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন মতিয়া। তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ১০ জানুয়ারি (১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস) বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আজ থেকে বাংলাদেশে মদ-জুয়া নিষিদ্ধ। সেই দেশে জিয়াউর রহমানই প্রথম হাউজি, মদ ও লাকি খানের ঝাঁকি নৃত্য প্রচলন করেছেন।
তিনি বলেন, ক্যাসিনোর প্রবক্তা হলেন জিয়াউর রহমান। একদিকে সংবিধানে বিসমিল্লাহির রহমানের রাহিম লিখলেন, অন্যদিকে মদ আর জুয়া চালু করলেন। বাংলাদেশকে একটি অদ্ভূত উটের পিঠে চড়িয়ে পরিচালনা করতে শুরু করেছিলেন জিয়া। যে নালে জন্ম, সেই নালে বিনাশ। হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন, একদিন সেই হত্যার শিকার হয়েই সার্কিট হাউজে পড়ে ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আপনারা গণতন্ত্র চর্চ করুন, রাজনীতি করুন। ষড়যন্ত্র বাদ দিন। ডাক্তার যখন ভুল করে, একটি রোগী মারা যায়। আর নেতা ভুল করলে, দল ভুল করলে পার্টি ছত্রখান হয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। খালেদা জিয়া সেটিই করে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, শাহ আজিজ মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতিসংঘে গিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করেছিলেন। সেই শাহ আজিজকে জিয়াউর রহমান প্রধানমন্ত্রী করেন। আব্দুল আলীমসহ যত স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, সবাইকে পুনর্বাসিত করেন। আমাদের চার মূলনীতিকে বেয়নেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে বাদ দিয়ে দেন। সব শেষে যে পার্টি গঠন করলেন, তার নাম বিএনপি। সেই দলের অর্থ যদি এভাবে দেখি— বাংলাদেশ নাউ পাকিস্তান (বিএনপি)। অর্থাৎ ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশকে আমি পাকিস্তানে পরিণত করেছি।
সংসদ নেতা শেখ হাসিনা ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন উল্লেখ করে মতিয়া বলেন, ক্যাসিনো নিয়ে বিএনপি কথা বলে। কিন্তু তারা ভুলে যায়, লন্ডনে আয়কর রিটার্নে তারেক রহমান আয়ের উৎস লিখেছে ক্যাসিনো। এটার লিখিত দলিল রয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে মানসিকতা প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আছে, তা আর কারও মধ্যে নেই। দেশের উন্নতির চিন্তা তিনি যেভাবে করেন, সেটা আর কেউ করেননি। সে কারণেই এই দেশের সব মানুষ এখন খেয়ে-পরে বেঁচে আছে। এই শীতে তাদের গায়ে কাপড় আছে, মাথার ওপর ছাউনি আছে।
ক্যাসিনো ঝাড়ুদার অ্যাসোসিয়েশন টপ নিউজ তারেক রহমান মতিয়া চৌধুরী সজীব ওয়াজেদ জয়