হামলায় নেতাকর্মীরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়: ইশরাক
২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:৪০ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৯:৫১
ঢাকা: হামলার পরও দলের নেতাকর্মী-সমর্থকরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার দেখে ওরা ভীত-সস্ত্রন্ত হয়ে পড়েছে। তাই আমাদের গণসংযোগে কাপুরষের মতো হামলা করছে। হামলা-গুলি করে জনগণকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়।’
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে হামলার পর গোপীবাগের বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন- বিএনপির হামলার ঘটনা পরিকল্পিত, নির্বাচন বানচালের ইঙ্গিত: আমু
ইশরাক বলেন, ‘এ ধরনের হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক। ধানের শীষের পক্ষে যে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে, তা দেখে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনকে বানচালের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে এ হামলা হয়েছে। এতে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। আমরা ভোটারদের আহ্বান জানাব, আপনারা অবশ্যই ১ ফেব্রুয়ারি নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন- ওয়ারীতে কাউন্সিলর প্রার্থীর অফিসে হামলা, আহত ৩
এই হামলার কারণে বাকি দিনগুলো নির্বাচনি প্রচারণায় কোনো শঙ্কা বোধ করছেন কি না?— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘একদমই না। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গুলির শব্দে আমি ভয় পাই না। জনগণের অধিকারের লড়াইয়ে আমি জীবন দিতে প্রস্তুত, রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত। মরতে হলে মরব, তবুও কোনো সন্ত্রাসীর কাছে মাঠ ছেড়ে দেবো না।’
হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইশরাক বলেন, ‘আমরা মতিঝিল এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে গণসংযোগ করে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মহিলা কমিশনার লাভলী চৌধুরী ক্যাম্পের সামনে দিয়ে বাসায় ফিরছিলাম। আকস্মিকভাবে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় তিন জন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নয়াদিগন্তের সাংবাদিক ইকবাল মজুমদার (তৌহিদ), সময় টিভির ক্যামেরাম্যান আশরাফুল ইসলাম ও বাংলাভিশনের সিনিয়র ক্যামেরাপারসন উজ্জ্বল দাস আহত হয়েছেন। আমার ওপরে হামলার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু আমার নেতাকর্মীরা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছে।’
‘ওখান থেকে যখন চলে আসি তখন কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়া হয়। আমি নিজে গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি,’— বলেন ইশরাক।
আরও পড়ুন- ইশরাকের ওপর ‘হামলায়’ তাবিথের নিন্দা
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর যখনই কোনো হামলা হয়েছে, তখনই সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমি নিজেই একজন কমিশনার প্রার্থীকে থানায় গিয়ে দেখে এসেছি। তার মাথা থেকে রক্ত পড়ছে। কিন্তু থানাও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর পুলিশ এসেছে। এর আগেও আমি বলেছি, কিছু কিছু থানায় কিছু কিছু কর্মকর্তা আমাদের সাহায্য করেছেন। কামরাঙ্গীরচরে আজকের মতো এরকম একটা ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। সেখানে তারা যথেষ্ট পরিমাণ সুরক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু ওয়ারী থানায় ন্যক্কারজনকভাবে অনেকগুলো ঘটনা ঘটছে। বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর ক্যাম্প পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আরেক জনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই থানার কর্মকর্তা একেবারেই দায়সারা গোছের কথা বলছেন। পুলিশ বিভাগের অনেকের কাছ থেকে সহযোগিতা পেলেও কেউ কেউ দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণ করছেন।’
এ হামলার ঘটনায় মামলা করবেন কি না?—এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘অবশ্যই আমি মামলা করব। কারণ, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের এতগুলো মানুষ আহত হয়েছেন, গণমাধ্যমের ভাইয়েরা আহত হয়েছে। মামলা তো করবই।’
ইশরাক হোসেন টপ নিউজ ডিএনসিসি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনি প্রচারণায় হামলা সিটি নির্বাচন