Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্ট: প্রস্তুত বন্দর, জানুয়ারিতে ট্রায়াল রান


৭ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৪৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চলতি জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলক পণ্য ট্রান্সশিপমেন্ট করবে ভারত। এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ট্রায়াল রানের জন্য ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে দুই দফায় দুটি জাহাজ পণ্য নিয়ে এ মাসে আসবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যন এসব তথ্য দিয়েছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের সম্মেলন কক্ষে এসময় বন্দরের সদস্য জাফর আলম, কমডোর এম শফিউল বারী এবং ক্যাপ্টেন এম মহিদুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ভারতকে ট্রান্সশিপমেন্ট দেওয়ার সুবিধা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য বন্দরের পক্ষ থেকে আমরা প্রস্তুত। এটা নিয়ে এরই মধ্যে চুক্তি হয়েছে। চুক্তির পর এ নিয়ে নির্দেশনাও এসেছে। জানুয়ারি মাসে দুটি ট্রায়াল রান হবে চট্টগ্রাম ও কলকাতা বন্দরের মধ্যে হবে। এটা মূলত ট্রান্সশিপমেন্টের ক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য। বন্দরে শুধু পণ্য জমা হবে। তারপর ট্রাকে করে সেটা চলে যাবে গম্তব্যে। আমরা শুধু ট্রায়াল রানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর বন্দর এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আদালতের নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ‘উচ্ছেদ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা শুরু হয়েছে, চলতে থাকবে। আমরা এক ধাক্কায় ৩০ শতাংশ জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এটা কিন্তু বিশাল জায়গা। এক ধাক্কায় করেছি বলে কম মনে হচ্ছে। এটা যদি সময় নিয়ে সপ্তাহ-মাস ধরে করতাম, তাহলে মনে হতো অনেক জায়গা। পরবর্তী ধাপে আরও ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বন্দরের জমি উদ্ধারের জন্য আমরা পরিকল্পনা করছি।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরে বন্দর চেয়ারম্যান জানান, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ওঠানামা হয়েছিল ২৯ লাখ ৩ হাজার, ২০১৯ সালে হয়েছে ৩০ লাশ ৮৮ হাজার। প্রবৃদ্ধি প্রায় ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ৩০ লাখের রেকর্ড অতিক্রম করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। ২০১৯ সালে পণ্য উঠানামা হয়েছে ১০ কোটি ৩০ লাখ মেট্রিকটন। প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে জাহাজ এসেছিল ৩ হাজার ৭৪৭টি, ২০১৯ সালে এসেছে ৩ হাজার ৮০৭টি।

লয়েডস লিস্টের জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের সেরা ১০০টি কনটেইনারবাহী বন্দরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান এখন ৬৪। ২০০৯ সালে ছিল ৯৮ তম। ২০২০ সালে যেটি প্রকাশ হবে সেখানে আরও চট্টগ্রাম বন্দর আরও এগোবে বলে আশা চেয়ারম্যানের।

বে-টার্মিনালে ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় হাজার মিটার দৈর্ঘ্যের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল এবং ১২২৫ ও ৮৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এতে জোয়ারের সময় বর্তমানের চেয়ে বেশি ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

নির্মাণাধীণ পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) মুজিববর্ষে চালুর আশ্বাস দিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এই টার্মিনালের ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। মুজিববর্ষে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করা যাবে। এতে ৬০০ মিটার জেটিতে ১৯০ মিটার লম্বা ও সাড়ে ১০ মিটার ড্রাফটের ৩টি কনটেইনার জাহাজ ও ২২০ মিটার লম্বা তেলবাহী জাহাজ ভিড়ানো যাবে। ব্যাকআপ ইয়ার্ড থাকবে ১৬ একর এবং কনটেইনার ধারণক্ষমতা সাড়ে ৪ হাজার। বিভিন্ন ইয়ার্ডের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১০৪টি নতুন ইক্যুইপমেন্ট কিনছে বলেও জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।

এছাড়া শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বাধা দেওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বাধা দিচ্ছি না, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হোক। শুধু বলছি, ট্রাক চলাচলে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার পর নিচে রাস্তা কতটুকু থাকবে, সেটা আমরা জানতে চেয়েছি। আমরা সিডিএ’র (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) কাছে লে-আউট চেয়েছিলাম। দেওয়ার পর অলরেডি এটা আমরা অ্যাপ্রুভ করেছি। এখন উনাদের দায়িত্ব তারা কাজটা কত দ্রুত শুরু করবেন।’

‘তবে আমি একটা কথা বলি, ২০২৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো ট্রাক নগরীতে ঢুকবে না। বে-টার্মিনালের সঙ্গে বন্দরের আলাদা রুট হচ্ছে। ট্রাক সেখানে আসবে, সেখান থেকে পণ্য নিয়ে সড়কপথে চলে যাবে। বন্দর থেকেও পণ্য ওই আলাদা রুটে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। সুতরাং ট্রাক নগরীতে ঢোকার প্রয়োজনই পড়বে না। আমরা এমন রুট করছি, যেটা ট্রাফিক রুটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না।’- বলেন চেয়ারম্যান।

স্ক্যানিং মেশিন বন্দর না কাস্টমস কিনবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাস্টমস নতুন দুটি স্ক্যানিং মেশিন স্থাপন শেষ করেছে। আমদানি-রফতানি কার্গো এগুলো দিয়ে স্ক্যান করতে পারবে। আইএসপিএস’র চাহিদা- রফতানি কার্গো স্ক্যান করা। আমরাও কয়েকটা স্ক্যানিং মেশিন কিনব।’

দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নৌকা আনার কথাও জানিয়েছেন বন্দর চেয়ারম্যান জুলফিকার আজিজ। তিনি বলেন, ‘দূষণ নিয়ন্ত্রণে, বিশেষ করে ফ্লোটিং গার্বেজ (ভাসমান আর্বজনা) নিয়ন্ত্রণে চীন থেকে বিশেষ নৌকা আনা হবে। আনতে পারলে মোহনায় দুইটা এবং সদরঘাটে দুইটা রাখব; যাতে নদীতে ময়লা না পড়ে। ড্রেজিং চলমান প্রক্রিয়া। কর্ণফুলীতে নরমাল ড্রেজিং সম্ভব না। গ্র্যাব দিয়ে ট্রায়াল করা হচ্ছে। সফল হলে আরও গ্র্যাব দিয়ে কাজ করা হবে।’

টপ নিউজ ট্রান্সশিপমেন্ট প্রস্তুত ভারত

বিজ্ঞাপন

নায়ক রাজের জন্মদিন আজ
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:২১

রাজশাহীতে পতন উড়ন্ত রংপুরের
২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:০৭

আরো

সম্পর্কিত খবর