Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অপপ্রচার চালিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে বিএনপি’


৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৩৮ | আপডেট: ৬ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:৪১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভিত্তিহীন অভিযোগ ও অপপ্রচার চালিয়ে বিএনপি নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম-৮ উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। চট্টগ্রাম ক্লাবে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমি মনোনয়ন পাওয়ায় বোয়ালখালী-চান্দগাঁও এলাকায় সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে। তাদের আস্থা-বিশ্বাস আমার ওপর আছে। এমনকি বোয়ালখালীতে অন্যান্য দল যারা করেন, তারাও আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। এসব দেখে পরাজয় নিশ্চিত মনে করে আমার প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রার্থী বিভিন্ন ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি চাই, সুন্দরভাবে নির্বাচন হোক, আমি স্বস্তিতে থাকব। সুন্দরভাবে নির্বাচন হলে আমি জিতব।’

‘বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে নির্বাচনের যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, শুধু শুধু অভিযোগ করে, সেটাকে বিঘ্ন করার চেষ্টা করছে বিএনপি। এখন পর্যন্ত কোথাও মারামারি হয়নি, কোনো কর্মী আহত হয়নি, অথচ তারা আহত হয়েছেন বলে প্রচার চালাচ্ছে। সাংবাদিকরা খোঁজখবর নিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে, এমনকি হাসপাতালেও কেউ চিকিৎসা নেননি, তারপরও এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।’ যোগ করেন মোছলেম উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আইনি বিধিবিধানের কারণে আমাদের মেয়র, মন্ত্রী-এমপিরা প্রচার চালাতে পারছেন না। অথচ বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র দিনরাত বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন আচরণবিধি ভঙ্গ করে। বিএনপি প্রার্থীর জন্য সেটা জায়েজ।’

বিজ্ঞাপন

‘আমি চেষ্টা করছি, নিয়মনীতি মেনে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে। তারপরও যারা বিগত সময়ে মানুষ হত্যা করেছে, জ্বালাও-পোড়াও করেছে, তাণ্ডব চালিয়েছে, তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।’ বলেন মোছলেম উদ্দিন।

নির্বাচিত হলে একবছরের মধ্যে কালুরঘাট সেতুর কাজ দৃশ্যমান করার পাশাপাশি বোয়ালখালীতে ইকোনমিক জোন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘কালুরঘাট সেতু করার উদ্যোগ কোনো সরকার নেয়নি। আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসে সেতু করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু কাজ একবার এগোলে আবার পিছিয়ে যায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কথা দিয়েছেন, এই সেতু নির্মিত হবে। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে এসে সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। আমি কথা দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যে সেতুর কাজ দৃশ্যমান হবে।’

কালুরঘাট সেতুকে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণ হওয়া খুবই প্রয়োজন। প্রসব বেদনা নিয়ে অনেক নারী আটকে থাকেন সেতুতে। সেতুতে যানজটে পড়ে মৃত্যুও হয়েছে। আমি এই এলাকার সন্তান। আরেকজন প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। তিনি তো আমাদের এই এলাকার মানুষের দুঃখ-বেদনার সঙ্গে পরিচিত নন। তিনি সরকারের সঙ্গে সংযুক্ত নন। এই কাজটি করার জন্য সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন ব্যক্তি যদি দায়িত্ব পান, তার পক্ষে কাজটি দ্রুত করা সম্ভব হবে। যদি এখানে অন্য কোনো প্রার্থী জয়লাভ করে, তার পক্ষে করা সহজ হবে না।’

ইকোনমিক জোন করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘মিরসরাইয়ে ইকোনমিক জোন হচ্ছে। তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। আনোয়ারায় ইকোনমিক জোন হচ্ছে। আমাদের বোয়ালখালীতে কড়লডেঙ্গা, আমুচিয়া, জৈষ্ঠ্যপুরা এলাকায় বিস্তীর্ণ জায়গা পড়ে রয়েছে, সেখানে লেবু ছাড়া আর কিছুর চাষ হয় না। অর্থনৈতিক জোন যদি সেখানে করা যায়, লক্ষ লক্ষ তরুণ-যুবকের কর্মসংস্থান হবে। আশা করি, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই বিষয়ে রাজি করাতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

জীবনসায়াহ্নে এসে মনোনয়ন পাওয়ায় আবেগাপ্লুত হওয়ায় কান্নাজড়িত কন্ঠে মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য আগামী দিনের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এই নির্বাচন রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে আজ ১১ বছর। আমি কোনো সরকারি পদ চাইনি, কোনো ব্যাংকের ডিরেক্টর পদ চাইনি, আমি একজন সাধারণ রাজনৈতিক কমী। আমি সাধারণ পরিবারের সন্তান। আমার পরিশ্রমে আমি এতদূর এসেছি।’

সাংবাদিকদের কাছে ‘একবার’ সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমি একটা সুযোগ পেয়েছি। আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই। আমাকে একবার সহযোগিতা দিন। কিন্তু আগুন সন্ত্রাসের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের সঙ্গে সমান করে আমার নিউজগুলো পরিবেশিত হয়, এতে আমার আঘাত লাগে।’

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, শ্রমিক লীগ নেতা সফর আলী, চট্টগ্রাম-৮ আসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব নোমান আল মাহমুদ, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগর কমিটি প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান ও কলিম সরওয়ার, বর্তমান সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমউদ্দিন শ্যামল ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস ছিলেন।

জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। মোছলেমের বিপরীতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন বিএনপির আবু সুফিয়ান।

উপ-নির্বাচন চট্টগ্রাম-৮ চট্টমেট্রো

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর