ইসির চিঠি: ফল প্রকাশের ১৫ দিন পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া বদলি নয়
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৫:৫৮ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৪
ঢাকা: ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় অনুমতি ছাড়া দুই সিটি এলাকার কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি না করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত আইন উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ভোটের ফলের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর ১৫ দিন পর্যন্ত কাউকে বদলি করা যাবে না।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের সই করা চিঠিটি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারের মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আপিল গ্রহণ ও আপিল নিষ্পত্তির জন্য বিভাগীয় কমিশনার, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হবে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি ও সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও নির্বাচনে দায়িত্ব পাবেন। এছাড়াও ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।
আইনের সংশ্নিষ্ট ধারা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য এবং স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০-এর বিধি ৩ অনুযায়ী কমিশন তার দায়িত্ব পালনে সহায়তার জন্য রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারবে। ওই ব্যক্তি বা নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে বাধ্য থাকবেন। ওই বিধিমালার ৮৯ ধারা অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলি করা যাবে না।
নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি নির্বাচন কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি তার ওই দায়িত্ব পাওয়ার পর নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন। এর আগে এ ধরনের ক্ষেত্রে নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। দুই সিটি নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশনা জারির জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে।
এর আগে, গত ২২ ডিসেম্বর দুই সিটির নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করে ইসি। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২ জানুয়ারি। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে। বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ জানুয়ারি, ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জানুয়ারি।
এরই মধ্যে দুই সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি। ঢাকা উত্তর সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণে শেখ ফজলে নূর তাপস। উত্তরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) কামরুল ইসলাম, দক্ষিণে হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন। আর ঢাকা উত্তরে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল এবং দক্ষিণের প্রার্থী অবিভক্ত ঢাকার শেষ মেয়র প্রয়াত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।