‘বিদেশি’দের আটক রাখতে ডিটেনশন ক্যাম্প বানাচ্ছে ভারত
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৮:০৯ | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:৫১
বিদেশি বা ভারতীয় নাগরিক নন এমন আখ্যা দিয়ে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্প বা আটককেন্দ্রে রাখার পরিকল্পনার কথা বরাবরই নাকচ করেছে ভারত সরকার। এমনকি গত ২২ ডিসেম্বর নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে দেওয়া ভাষণে দাবি করেন, ভারতে কোনো ডিটেনশন ক্যাম্প নেই।
তবে হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামের গোয়ালপাড়াতে নির্মাণের শেষ পর্যায়ে রয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় ডিটেনশন ক্যাম্পটি। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪৬ কোটি রুপি ব্যয়ে ২৫ বিঘা জমিতে এই আটককেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার বন্দিকে রাখা যাবে।
এই ক্যাম্পটির নির্মাণে নিয়োজিত কর্মী মুকেশ বাসুমাতারি বলেন, আমাদের এই মাসেই এটির নির্মাণকাজ শেষের কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ থাকায় সম্ভব হয়নি।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিটেনশন ক্যাম্পের কাজ শেষের চিন্তায় তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানান।
নির্মাণাধীন ডিটেনশন ক্যাম্পের চারপাশ ২০ থেকে ২২ ফুট উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এখানে হাসপাতাল, স্কুল, রান্নাঘর, অফিস ও খাবার ঘরের জন্য জায়গা রাখা হয়েছে।
মোদি তার ভাষণে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতে চলমান আন্দোলনকে কংগ্রেস ও নকশালদের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে বলে গুজব ছড়াচ্ছে এরা।
ভারতের সরকারি কর্মকর্তারা এই ডিটেনশন ক্যাম্প নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। আগামী মার্চ নাগাদ এই আটককেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হবে। এরকম আরও ১০টি ক্যাম্প নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এটি ছাড়াও গোয়ালপাড়া, কোকরাজহার, জোরহাট দিবরুগা, তেজপুর ও সিলচারে আটককেন্দ্র রয়েছে। ইতোমধ্যে চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় রাজ্যটির ১৯ লাখ মানুষ ভারতীয় নাগরিকত্ব হারিয়েছেন।
বিজেপি নেতা ও আসামের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, এসব ডিটেনশন সেন্টার নির্মিত হয়েছে গোহাটি হাইকোর্টের নির্দেশে। প্রধানমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন। কেন্দ্র সরকার এসব নির্মাণ করছে না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার মানুষকে ‘অবৈধ’ ও ‘বিদেশি’ নাগরিক ঘোষণা করে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল। তাদের মধ্যে ৭৩ হাজার জনকে ‘ফেরত পাঠানো হয়েছে’ ‘ ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছে’ অথবা ‘খোঁজ মিলছে না’।