Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তৃণূমূলে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার শেখ হাসিনার


২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:০৩ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৪১

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় সম্মেলনের পরই সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কাউন্সিল করা হবে। তৃণমূলের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন থেকে উপজেলা, উপজেলা থেকে জেলার কাউন্সিল হবে। আওয়ামী লীগকে আমরা আরও তৃণূমূল পর্যায় থেকে শক্তিশালী করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সম্মেলনে কাউন্সিলর ডেলিগেট, কাউন্সিলর, শুভাকাঙ্ক্ষী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অতিথিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছেন, যেকোনো একটা কাজ করতে গেলে একটা সংগঠন দরকার। রাজনৈতিক দল ছাড়া এবং সেই দল যদি আদর্শ নিয়ে চলে; তাহলে সেই দলই পারে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একমাত্র দল, যে দল এদেশের মানুষের ভাষার অধিকার দিয়েছে। স্বাধীনতা দিয়েছে। অর্থনৈতিক মুক্তির পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশ জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছেন, ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা; আমরা সেই সোনার বাংলা গড়ে তুলবো। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা, এটাই আমাদের কাম্য।’

সারাদেশ থেকে আগত তৃণমূল নেতাকর্মীদের সামনে আগামী দিনের জন্য সংগঠনকে আরও সুসংহত ও শক্তিশালী করে গড়ে তোলার প্রত্যয় অঙ্গীকার করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বর্তমান কমিটির মেয়াদকালে সারাদেশে কতটি সাংগঠনিক ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে তা উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে সারাদেশে প্রায় ২৯টি জেলার কাউন্সিল হয়ে গেছে। বাকিগুলোও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস আমাদের অত্যন্ত ব্যস্ততার মাস। এ কারণে আমরা আর করতে পারিনি। যেহেতু আমাদের জাতীয় কাউন্সিল; কিন্তু এরপর পরেই আমরা বাকি সমস্ত জেলার কাউন্সিল করবো। একেবারে তৃণমূল থেকে প্রত্যেক ইউনিয়ন উপজেলা, জেলার কাউন্সিল হবে।’

বিজ্ঞাপন

ডিজিটাল বাংলাদেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য দলীয় নেতাদের তথ্য সম্বলিত তথ্য ভাণ্ডার করা হচ্ছে, সে কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দলের নেতাদের প্রত্যেকের নাম ইতোমধ্যে আমাদের একটি ছোট সেল কাজ করে ডাটাবেজ তৈরি করছি। প্রতিটি এলাকার আমাদের ডাটাবেজ থাকবে। এই সংগঠনের তৃণূমূল পর্যায় থেকে আরও শক্তিশালী করা, এটাই আমাদের লক্ষ্য।’

কখনও ভাবিনি এত বড় গুরুদায়িত্ব নিতে হবে: শেখ হাসিনা

জাতীয় সম্মেলনের আগে সারাদেশে বিভিন্ন জেলায় যারা কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতা নির্বাচিত হয়ে সম্মেলনে যোগদান করেছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি যে সমস্ত জেলা কাউন্সিল সম্পন্ন করতে পারেনি তাদেরকে আগামী দিনে দ্রুত কাউন্সিল সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ কাউন্সিলের মধ্য দিয়েই সংগঠন চাঙ্গা হয়। সংগঠন আরও শক্তিশালী হয়। কাজেই আমরা সেইভাবেই সংগঠনকে গড়ে তুলতে চাচ্ছি।”

এছাড়াও জাতীয় সম্মেলন সফলভাবে শেষ করার লক্ষ্যে যারা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।

শনিবার কাউন্সিল অধিবেশনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজ এটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। আগামীকাল সকাল সাড়ে দশটায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আমাদের কাউন্সিল অধিবেশন বসবে, সেখানে কেবলমাত্র আমাদের কাউন্সিলর যারা তারাই থাকবে। কারণ মূল সম্মেলনের নেতা নির্বাচন থেকে শুরু করে আমাদের সংগঠন, গঠনতন্ত্র, এবং আমাদের ঘোষণাপত্রে যেগুলো গ্রহণ করা হবে, সব আমাদের কাউন্সিল অধিবেশনেই করা হবে।’

জাতীয় সম্মেলনে উপস্থিত সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনারবাংলা ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলব এই কাউন্সিলের মাধ্যমে; এই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

এর আগে, দু’দিন ব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। আগামীকাল (২১ ডিসেম্বর) সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিল অধিবেশনে বসবে দলটি। সেখানেই গঠনতন্ত্র সংশোধনী, ঘোষণাপত্র অনুমোদনসহ তৃণমূল নেতাদের বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশের প্রেক্ষিতে সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করবে আওয়ামী লীগ। এরপর কাউন্সিল অধিবেশনে ১ম পর্বে সম্মেলনের মূলতবি ঘোষণার পরে সম্মেলন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনি সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন আগামী দিনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত করবেন এবং নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করবেন।

বিকাল তিনটার কিছুক্ষণ পরেই সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হয়ে মূল প্যান্ডেলের পাশে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা একই সাথে সাথে পায়রা ও বেলুন উড়ান। পায়রা ও বেলুন উড়ানের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ কমিটির আহ্বায়ক এবং দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।

সোনার বাংলা গড়ে তুলবই, কাউন্সিলে প্রতিজ্ঞা শেখ হাসিনার

এরপর জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে সম্মেলন মঞ্চে উঠে হাত নেড়ে অভিবাদন জানিয়ে সভাপতির আসনে বসেন। আসনে বসার আগে তার পাশে থাকা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। এরপর সম্মেলন প্রস্তুতি সাংস্কৃতিক উপ-কমিটি পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু হয়।

শিল্পী ও কলাকুশলীদের চোখধাঁধানো মনোমুগ্ধকর নানা ধরনের পরিবেশনা শেষে বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। শুরুতেই শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- সম্মেলন প্রস্তুতি অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তারপর দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক প্রতিবেদন পাঠ করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মঞ্চের প্রথম সারিতে দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১১জন নেতার বসার আসন ছিল। একদিকে ছিলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল মাল আবদুল মুহিত, এইচ টি ইমাম। অপরপাশে ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ১নং সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ।

মঞ্চে পরের সারিগুলোতে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যৌথভাবে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

এছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাংস্কৃতিক উপ কমিটির সদস্য সচিব এবং দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল তৃণমূল শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

শেষ কবে এতটা নিচে ছিলেন কোহলি?
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৪৪

মুম্বাই যাচ্ছেন শাকিব খান
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৫

আরো

সম্পর্কিত খবর