Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘গ্রামীণফোনের হয়ে রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে টেলিনর’


১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:০৭ | আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ২৩:১৪

ঢাকা: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন,সালিশের জন্য (আরবিট্রেশন) রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনের অধিকাংশ শেয়ারের মালিক টেলিনর। সরকারের রাজস্ব বকেয়া পরিশোধে গ্রামীণফোনকে দেওয়া আদালতের নির্দেশের পর এ ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সঙ্গে মত বিনিময়কালে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ২৪ নভেম্বর মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোনকে আপাতত দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় গ্রামীণফোনের কাছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার ওপর হাইকোর্টের জারি করা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়ে যাবে বলেও সতর্ক করেছিলেন আদালত।

নোটিশের বিষয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘জিপি সিঙ্গাপুরের একটি আইন সংস্থার মাধ্যমে আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়েছে আরবিট্রেশনে (সালিশ) যাওয়ার জন্য। আমি মনে করি যে এটি খুব দুঃখজনক, বাংলাদেশে ব্যবসা করবে একটি প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়ে আরবিট্রেশনের জন্য চাপ দেবে, এটা বোধহয় কোনোভাবে আমাদের কাছে খুব সহজে গ্রহণ করার মতো অবস্থা না।’

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এটা বুঝি, ব্যবসা যদি কেউ করে তাহলে ব্যবসার ক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের সমস্যা থাকবে। আমাদের দায়িত্ব ফ্যাসিলেটেড করার, আমরা তাদের ফ্যাসিলেটেড করব।’

বিজ্ঞাপন

নোটিশের বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করা আছে। সবাই বিষয়টাকে জানে। এ বিষয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এই উকিল নোটিশ নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এর কারণ হচ্ছে তারা যে জায়গায় চাচ্ছে সে জায়গাটা হচ্ছে আরবিট্রেশন যেন করা হয়। আরবিট্রেশন করার জায়গায় আমরা উম্মুক্ত আছি। আদালতের বাইরে আরবিট্রেশন করার ‍সুযোগ নেই।’

‘আদালত যদি হুকুম দেয় আরবিট্রেশন করার তাহলে করতে পারবো। যে দেশে বিজনেস করে সে দেশের আইন-আদালত অমান্য করে দুনিয়ার কোন জায়গায় গিয়ে অন্য বিচার পাওয়ার সম্ভবনা নাই। আমরা সঠিক পথে আছি, আদালত তার দৃষ্টিভঙ্গি চমৎকারভাবে করেছে’, বলেন মন্ত্রী।

গ্রামীণফোন আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে কিনা প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এরকম একটি ধারণা দিয়েছে যদি আরবিট্রেশন না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবেই। তবে আমার যেটা অবজারভেশন, বাংলাদেশের আদালতে হেরে গিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে কিছু একটা করা যাবে আমি এটা বিশ্বাস করি না। দিনের শেষে অংকটা সহজ ব্যবসাটা বাংলাদেশেই করতে হবে, বাংলাদেশের আইন কানুন না মেনে আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা করে দেবে না।’

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সহানুভূতিশীল, আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক, আমরা সমস্যার সমাধান করার জন্য সব ধরণের উদ্যেগ নিতে প্রস্তুত। কিন্তু এর মধ্যে থেকে কেউ জাতীয় স্বার্থ বিপন্ন করে আমরা সেটি আর করতে পারি না।’

গ্রামীণফোনের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রবি ইতিমধ্যে প্রস্তাব দিয়েছে মামলা তুলে নিতে চায়। আমরা তো মামলায় যাইনি, ওরা যদি মামলো তুলে নিয়ে আলোচনায় বসে তাহলে কোনো আপত্তি নেই। তবে মামলা চলাকালীন অবস্থায় আলোচনা করতে পারি না কারণ সেটি আদালত অবমাননা হয়ে যাবে। তবে জিপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারবো না, যতক্ষণ আদালতের রায় তারা না মানে।’

উল্লেখ্য, গ্রামীণফোনের কাছে অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। পাওনা চেয়ে গত এপ্রিল মাসে চিঠি দেয় বিটিআরসি, কিন্তু তারা আদালতে যায়। অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে অপারেটর দু’টির সাথে বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হলেও তাতে সফলতা আসেনি। বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় আদালতে যায় রবি ও গ্রামীণফোন।

অনুষ্ঠানে টিআরএনবি সভাপতি মুজিব মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল আনোয়ার শিপুসহ সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উকিল নোটিশ গ্রামীণফোন টপ নিউজ রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ