Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার রোধে গাইডলাইন জারি


১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৫৮ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:১৩

ঢাকা: বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচার তথা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে একটি গাইডলাইন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকটির মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে কার্যরত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এই গাইডলাইন জারি করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে এই গাইডলাইন জারি করলো।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক ও সহকারী মুখপাত্র জী এম আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত ফোকাস গ্রুপ এই গাইডলাইনের খসড়া প্রণয়ন করে। পরে সব মহলের মতামত নিতে খসড়াটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। পরে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) চূড়ান্ত গাইডলাইনের সার্কুলার জারি করা হয়।

বিএফআইইউয়ের গাইডলাইন অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যাংক বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিং ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে নিজস্ব গাইডলাইন বা ম্যানুয়েল প্রস্তুত করে আগামী ১০ মার্চের মধ্যে বিএফআইইউ’র কাছে দাখিল করবে। পরে ১ জুনের মধ্যে এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।

গাইডলাইনের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে বলা হয়, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, পাচার করা অর্থের ৮০ শতাংশেরও বেশি বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে পাচার হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন ও সংবাদমাধ্যমেও বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি মানিলন্ডারিং বা অর্থ পাচার হচ্ছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও বিএফআইইউ, দুদক ও সিআইডি’র যৌথ উদ্যোগে প্রণীত ‘বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঝুঁকি নিরূপণ প্রতিবেদনে’ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং ও বিদেশে অর্থ পাচারকে ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

এছাড়াও গত ২৯ জানুয়ারি গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) অর্থ পাচার বিষয়ক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী ট্রেড মিস ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ পাচারকারী শীর্ষ ২০টি দেশের তালিকাতেও বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তম। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ট্রেড মিসইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ দেশে প্রবেশ করেছে, এমন প্রথম ৫০টি দেশের তালিকাতেও বাংলাদেশের নাম রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিএফআইইউতে যতগুলো কেস আসে, তার বেশিরভাগই বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারের হার সবেচেয়ে বেশি। যেসব পণ্যের ওপর আমদানি শুল্ক কম (যেমন— মুলধনী যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল, কম্পিউটার সামগ্রী ইত্যাদি) বা যেসব পণ্য বা সেবার দাম নির্ধারণ কঠিন, সেসব পণ্য বা সেবা আমদানির মাধ্যমে অর্থ পাচার হয়ে থাকে। এর বিপরীতে রফতানি করা পণ্যের মূল্য কম দেখিয়ে অবশিষ্ট অর্থ বিদেশে রেখেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলছে, আমদানি করা পণ্যের বিবরণ পরিবর্তন করে বা কোনো পণ্য আমদানি না করে কেবল ডক্যুমেন্টের বিপরীতে মূল্য পরিশোধ করেও অর্থ পাচার হয়ে থাকে। আবার একই পণ্য বা সেবার একাধিক চালান ইস্যু করা, ঘোষণার তুলনায় পণ্য বা সেবা বেশি বা কম আনার মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়ে থাকে।

অবৈধভাবে অর্থ পাচার অর্থ পাচার বাংলাদেশ ব্যাংক মানিলন্ডারিং মিসইনভয়েসিং

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর