Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আদালতে গণহত্যার অভিযোগ শুনছেন সু চি


১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৩৪ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৯:১৯

সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা নিধন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি হচ্ছে  হেগের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে)। খবর সিএনএনের।

প্রথম দিনের শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। তিনি তার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। অপরদিকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার অভিযোগ জানাচ্ছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) এই মামলার শুনানি শুরু হয়। ১৫ বিচারকের সঙ্গে প্যানেলে আছেন গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মনোনীত দুই বিচারক। তিন দিনের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত দেবেন। গাম্বিয়া রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অন্তবর্তীকালীন পদক্ষেপ চাইছে বলে জানিয়েছে অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

শুনানির শুরুতে প্রধান বিচারক আব্দুলকায়ি আহমেদ ইউসুফ অভিযোগ পড়ে শোনান। এরপর রাখাইনে গণহত্যা নিয়ে কথা বলেন অধ্যাপক পায়াম আখাভান। তিনি জানান, কীভাবে মিয়ানমার সেনারা রাখাইনে হত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ছিল। এছাড়া, রোহিঙ্গাদের পুরো দেশ থেকে যেভাবে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় ও নিপীড়নের চালানো হয়, জাতিসংঘের অনুসন্ধানের বরাতে তাও উঠে আসে তার বক্তব্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহিঙ্গা বিরোধী প্রোপাগান্ডার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

গাম্বিয়ার পক্ষে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রফেসর স্যান্ডিস বলেন, গণহত্যার বিচারের জন্য এই আদালত সর্বশেষ আশ্রয়স্থল। সবাই মামলাটির দিকে তাকিয়ে আছে। মিয়ানমার গণহত্যা বিষয়ে কখনোই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, গাম্বিয়া আদালতের কাছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ৬টি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চায়। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে, আর যেন গণহত্যার মতো ঘটনা মিয়ানমারে না ঘটে তা নিশ্চিত করা, আগের গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা, রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার সরকার উভয় পক্ষকে শান্ত থাকা এবং উত্তেজনে প্রশমনে সাহায্য করা। এছাড়া, মিয়ানমার জাতিসংঘকে তদন্তের ব্যাপারে সাহায্য করবে এই নিশ্চয়তাও চায় গাম্বিয়া।

আগামীকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মিয়ানমার গাম্বিয়ার অভিযোগের বিষয়ে নিজেদের মতামত তুলে ধরবে।

প্রসঙ্গত, গত ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক করপোরেশন (ওআইসি) মিয়ানমারে বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সমর্থন করছে।

শুনানিতে বিচারক প্যানেল সু চিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। রোহিঙ্গাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিয়ানমার সরকারকে দিক নির্দেশনা দিতে পারেন। মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য গাম্বিয়া আদালতের প্রতি অনুরোধ জানাবে। ডিসেম্বরের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের লক্ষ্য করে অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। ওই অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ ও তাদের সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগ উঠে। অভিযানের মুখে ১১ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। সে সময় মিয়ানমারের সেনাসদস্য, পুলিশ ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী রোহিঙ্গাদের নিধনে সরাসরি অংশ নিয়েছে বলে জাতিসংঘের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।

অং সান সু চি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) গণহত্যা রোহিঙ্গা নিধন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর