ঢাবির সমাবর্তন ঘিরে উচ্ছ্বাস
৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:৪৪ | আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৪৫
ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সোমবার (৯ ডিসেম্বর)। সমাবর্তনে অংশ নিতে স্নাতক ডিগ্রিধারী ২০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
সমাবর্তন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত দুদিন উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাবর্তনের কস্টিউম (গাউন-টুপি ) বিতরণ করে। গাউন টুপি পাওয়ার পরই শিক্ষার্থীরা সেগুলো পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মধুর স্মৃতি ধরে রাখা শুরু করেন ছবি তোলার মাধ্যমে।
শিক্ষার্থীরা দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রিয় স্থান টিএসসি, অপরাজেয় বাংলা, কার্জন হল, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, ভিসি চত্বরে ফটোসেশন করছেন। একইসঙ্গে সমাবর্তনের টুপি আকাশে ছুড়ে তারা শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা সমাবর্তনের কালো গাউন, টুপি পরে বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ আবার কেউবা সিঙ্গেল ফটো তুলছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্বরের সামনে ছবি তুলতে দেখা যায় প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাবরিন সুলতানাকে। তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো কনভোকেশনে অংশ নিচ্ছি। অনেক ভালো লাগছে, ছবি তুলছি। গতকাল কার্জন হলে ছবি তুলেছি, আজ কলাভবনের দিকে এসেছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে সমাবর্তন শিক্ষার্থী ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আফিয়া সুলতানা আশা বলেন, ‘সমাবর্তন সব শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আনন্দময় মুহূর্ত। সবারই এটি নিয়ে প্রত্যাশা থাকে। সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি যেমন আনন্দের, তেমনি চিন্তারও। কারণ পড়ালেখা শেষ হচ্ছে, ভালোমতো চাকরি পাওয়ার টেনশন তো থাকেই।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘পরিশ্রম করে ভালো জায়গায় যেতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে কিছুটা অনিশ্চয়তা তো রয়েছে।’
এদিকে সমাবর্তন সামনে রেখে কেউ কেউ তাদের বাবা-মা’কে ক্যাম্পাসে নিয়ে এসেছেন। বাবা-মায়ের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে দেখা হয় পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজীদ খানের সঙ্গে। সমাবর্তনে তিনি গ্রাম থেকে বাবা-মাকে নিয়ে এসেছেন। তানজীদের বাবা আফজাল হোসেন খান ছেলের সমাবর্তনে ক্যাম্পাসে আসার অনুভূতি বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে, নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে।’
এদিকে, সমাবর্তন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়ালেখা শেষের উচ্ছ্বাস থাকলেও রয়েছে কর্মজীবন নিয়ে উৎকণ্ঠা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করে কবেনাগাদ শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাবেন সেটি এখন চিন্তার বিষয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবর্তনের ছবি তুলতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল তানভীরের সঙ্গে কথা হয়। পড়ালেখা শেষে কর্মজীবন নিয়ে কী ভাবছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা শেষ করছি। সরকারের উচিত আমাদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা। কিন্তু পড়ালেখা শেষ হওয়ার কতদিন পর চাকরি পাব সেটি নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেছি। কিন্তু সমস্যা হলো বাংলাদেশে বিভাগওয়াইজ চাকরির খাত খুবই সীমিত। চাকরির বাজার সবার জন্য সমান। বিসিএস বলি আর ব্যাংক বলি সাবজেক্ট এক্সপার্টদের কোনো মূল্য নেই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশে চাকরির সিস্টেমে একটি ভুল আছে। যদি এমন হতো যে বিষয়ে যে অভিজ্ঞ, চাকরিপ্রার্থীরা সে ধরনের চাকরি পাবে। তাহলে অনেক ভালো হতো।’