রফতানি খাতে বস্ত্র শিল্পের অগ্রগতি
৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৮
ঢাকা: রফতানি খাতে বাড়ছে বস্ত্র শিল্পের অবদান। বর্তমানে এটি বাংলাদেশে একটি প্রধান ও দ্রুত বর্ধনশীল খাত। প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এই খাতে সরাসরি সম্পৃক্ত।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই খাত থেকে মোট ৩৪ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় হয়েছে। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি। এই সাফল্য ধরে রাখতে দেশের ৮ হাজার ২০১টি তৈরি পোশাক ও বস্ত্র শিল্প কারখানার বিকাশে বস্ত্র অধিদফতর দায়িত্বশীলভাবে কাজ করছে।
বস্ত্রখাতের উন্নয়নে বস্ত্র প্রযুক্তি শিক্ষা কার্যক্রমে বস্ত্র অধিদফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন ৭টি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ৭টি টেক্সটাইল ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট এবং ৪২টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট চালু রয়েছে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৫৫ জন, ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট থেকে ৯ হাজার ৮৫৪ জন এবং টেক্সটাইল ভোকেশনাল থেকে ৩৫ হাজার ২৩৩ জন ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বস্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়াতে আরও ১৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে।
অন্যদিকে বস্ত্র খাতের সঠিক বিকাশ ও সুরক্ষার জন্য বস্ত্র নীতি ২০১৭ ও বস্ত্র আইন ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বায়িং হাউজ নিবন্ধনে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ষাটের দশকে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে যাত্রা শুরু হলেও সত্তরের শেষের দিকে রফতানিমুখী খাত হিসেবে এই শিল্পের প্রসার ঘটতে থাকে। ১৯৮১-৮২ সালে মোট রফতানি আয়ে বস্ত্রখাতের অবদান ছিল মাত্র ১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা মোট রফতানি আয়ের ৮৪ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
বস্ত্র খাতের অগ্রযাত্রায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অনুপ্রাণিত করতে সরকার ৪ ডিসেম্বর ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ ঘোষণা করেছে। আর এই দিবসকে সামনে রেখে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, পরিবেশবান্ধব বস্ত্র শিল্প কারখানা স্থাপন, বস্ত্রখাতের রফতানি বাজার সম্প্রসারণ এবং এ খাতের সার্বিক উন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালাতে আমি মালিক-শ্রমিকসহ পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে বস্ত্র খাত দেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। আওয়ামী লীগ সরকার এই খাতের সার্বিক উন্নয়নে বস্ত্র নীতি ২০১৭ ও বস্ত্র আইন ২০১৮ প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বস্ত্র পরিদফতরকে বস্ত্র অধিদফতরে উন্নীত করা হয়েছে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এক বাণীতে বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। দেশীয় কাঁচামালভিত্তিক শিল্পায়নের ধারা জোরদার করে কৃষি ও শিল্প খাতের যুগপৎ উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন। এ লক্ষ্যে তিনি পরিত্যক্ত কলকারখানা জাতীয়করণ করে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ও শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
বাণীতে তিনি আরও বলেন, দেশের শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও রফতানি বাড়াতে বস্ত্র খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষত বস্ত্র খাত থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয়ের সিংহ ভাগই অর্জিত হয়। এছাড়া সরকারের নেওয়া নীতিমালা ও পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে বস্ত্রখাতের রফতানি বাজার সম্প্রসারণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, পরিবেশ রক্ষা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত করতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জাতীয় বস্ত্র দিবস টপ নিউজ পাটমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বস্ত্র শিল্প রাষ্ট্রপতি