অনলাইন সংবাদ পোর্টালের নিবন্ধন শুরু আগামী সপ্তাহে: তথ্যমন্ত্রী
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৭:৪৪
ঢাকা: আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যে অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলো আছে, সেগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনতে আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। এ পর্যন্ত সবমিলে ৩ হাজার ৫৯৭টি আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলো তদন্ত করার জন্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগসহ আলোচনা করে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিলাম, যত দ্রুত সম্ভব অনলাইনগুলোর তদন্ত শেষ করে তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য; যাতে আমরা নিবন্ধনের কাজটি শুরু করতে পারি।’
ড. হাছান বলেন, ‘আমাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা যে কয়েকশ’ অনলাইনের তদন্ত শেষ করেছে, তার প্রতিবেদন আজ বা কালকের মধ্যে আমাদের কাছে পাঠাবে। আমরা আগামী সপ্তাহ থেকে অনলাইনগুলোর নিবন্ধন দেওয়া শুরু করব। প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লাগবে। কারণ, সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি অনলাইনের তদন্ত শেষ করা সহজ কাজ নয়।’
তিনি আরও বলেন,‘ভবিষ্যতেও যেন অনলাইন সংবাদ পোর্টাল কেউ করতে পারে, সেজন্য আমরা পরবর্তীতে আবার দরখাস্ত আহ্বান করব। কারণ, এখানে যে অনলাইনগুলো আছে সেগুলোতেই তো এ মাধ্যম শেষ হয়ে যেতে পারে না। পত্রিকা যেমন যে কেউ যেকোনো সময় বের করতে পারে, ভবিষ্যতে তেমনি অনলাইনও বের করতে পারবে। কিন্তু ভবিষ্যতে অনলাইন পোর্টাল চালু করতে হলে একটি প্রক্রিয়ায় অনুমতির মাধ্যমের করতে হবে। পত্রিকা বের করতে চাইলে যেমন নামের ছাড়পত্র নিতে হয়, অনলাইনের ক্ষেত্রেও একটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করে বের করতে হবে। আইপি টিভি, আইপি রেডিও’র জন্যও আমরা দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম। এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সবাইকেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।’
এ সময় টেলিভিশনে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল প্রচারকে নিয়মনীতির আওতায় আনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘বিভিন্ন টেলিভিশনে যে ডাবিং করা বিদেশি সিরিয়াল প্রচার করা হয়, সেগুলোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে এবং অনুমতির জন্য দরখাস্ত পড়েছে অনেকগুলো। এগুলো একটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে যাওয়া প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে আমরা একটি বাছাই কমিটি গঠন করেছি। এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানি নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করে ইউটিউব বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ছে। আবার সেখানে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। সেখানেও তারা ব্যবসা করছে। এটির লাইসেন্স তাদেরকে দেওয়া হয়নি। তাদেরকে মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এটি বন্ধ করার জন্যে এরই মধ্যে আমরা টেলিযোগাযোগ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটিকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর। যে কেউ চাইলেই লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা করতে পারে না।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনলাইন পত্রিকার ভিডিও কনটেন্ট এবং টিভি চ্যানেলগুলোর অনলাইন চালাতেও অনুমতি লাগবে। এগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। সবকিছু শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে। কারণ যিনি যেটার লাইসেন্স পেয়েছেন সেটার বাইরে যেতে পারবেন না। এবং শুধু পত্রিকাগুলো যে অনলাইনে ভিডিও কন্টেন্ট করছে তাই নয়, টেলিভিশনগুলোও অনলাইন চালু করেছে। সেটিরও অনুমতি এখন পর্যন্ত নেই। সুতরাং সবকিছুকে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্যেই আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইউটিউব, ফেসবুকসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের মাধ্যম ব্যবহার করে যে ব্যবসা হচ্ছে বা বিজ্ঞাপন যাচ্ছে সেগুলোর ওপর শুল্ক ধার্যের বিষয়টা আসবে। আমরা এনবিআরের সাথেও কথা বলেছি। কেউ যদি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে করে, সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের আইন মেনেই করতে হবে।’