বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু মামলার রায় আজ
১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৯
ঢাকা: রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর বাসচাপায় মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ।
রোববার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস দুপুর ৩ টার মধ্যে এ রায় ঘোষণা করবেন। সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা (যাবজ্জীবন কারাদণ্ড) প্রত্যাশা করছি। রোববার মামলার অনেক চাপ রয়েছে। এ কারণে দুপুর তিনটা থেকে চারটার মধ্যে রায় ঘোষণা করবেন আদালত।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী টিএম আসাদুল সুমন জানান, মামলাটিতে অনেক ভুল-ত্রুটি রয়েছে। আমরা আশা করি আদালত সবদিক বিবেচনা করে সকল আসামিদের খালাস দিবেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম সারাবাংলাকে জানান, আসামিরা রাজীব দিয়াকে ইচ্ছাকৃতভাবে খুন করেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই। উপযুক্ত বিচার হলে মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে। তাদের বিচার হলে অন্য ড্রাইভাররা দেখে তারাও ভয় পাবে, অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকবে। অদক্ষ ড্রাইভারদের বিচার চাচ্ছি। তাদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।
অপরদিকে নিহত মিমের মা রোকসানা বেগম জানান, ড্রাইভার যদি একটু সাবধানে গাড়ি চালাতো তাহলে আজ আমার এভাবে মেয়েকে হারাতে হতোনা। আমার মেয়ে যদি রাস্তা পার হওয়ার সময় এক্সিডেন্ট করতো তাহলেও এতোটা দুঃখ থাকতো না। মনে করতাম আমার মেয়েরই ভুল ছিল। কিন্তু আমার মেয়ে তো গাড়িতে উঠার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। যেখান থেকে যাত্রীরা গাড়িতে উঠে সেখানেই তারা দাঁড়িয়ে ছিল। তারা তো কোন ভুল করেনি। তারপরও তাদের ওপর গাড়ি চালিয়েছে ড্রাইভার। আর যেন কোনো মায়ের কোল যেন এভাবে খালি না হয়। এজন্য সর্বোচ্চ সাজার দাবি প্রত্যাশা করছি।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেছিলেন। এই মামলার আসামি হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও মো. জোবায়ের সুমন, চালকের সহকারী মো. এনায়েত হোসেন, বাসমালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মো. আসাদ কাজী। আসামিদের মধ্যে মো. আসাদ কাজী পলাতক। এছাড়া অপর চার আসামি কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে গত ৭ অক্টোবর কারাগারে থাকা চার আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলার আরেক আসামি জাবালে নূর পরিবহনের বাসমালিক মো. শাহদাত হোসেন আকন্দের মামলার অংশের কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। মামলাটিতে ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উত্তর ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক কাজী শরীফুল ইসলাম ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। গত ২২ অক্টোবর চার্জশিট গ্রহণ করেন আদালত। এরপর ২৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে একই পরিবহনের দ্রুতগতির আরেকটি বাস সামনের বাসটিকে ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে বাসটির চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) ও দিয়া খানম ওরফে মিম (১৬)। এ সময় আহত হন আরও নয়জন।
ওই ঘটনায় ২৯ জুলাই দিবাগত রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম একটি মামলা দায়ের করেন।
টপ নিউজ নিরাপদ সড়ক চাই মামলার রায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট সড়ক দুর্ঘটনা