সৌদি আরব থেকে ফিরলেন আরও ১২৫ বাংলাদেশি
২৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৩৯
ঢাকা: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের বাসিন্দা আফজাল (২৬)। আড়াই মাস আগে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। হঠাৎ একটি বাজার করার জন্য বাসা থেকে বের হলে পথে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পাঠিয়ে দেওয়া হয় দেশে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ বিমানে দেশে ফেরা ১২৫ বাংলাদেশির একজন আফজাল। তার দাবি, কাজের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও তাকে বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সৌদি আরবে চলছে ব্যাপক পুলিশি ধরপাকড়। এমন পরিস্থিতিতে চলতি মাসের তিন সপ্তাহে মোট দুই হাজার ৬১৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। ফিরলেন। মুখে দেশটি থেকে আরও ১২৫ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।
বরাবরের মতো এবারও দেশে ফেরা বাংলাদেশিদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
আরেকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কামরুল। তিনি জানান, চার লাখ ৬০ হাজার টাকা খরচ করে গিয়েছিলেন সৌদি আরব। কিন্তু আড়াই মাসের মাথায় তাকে দেশে ফিরতে হলো শূন্য হাতে।
দুই বছর ধরে সৌদি আরবের একটি সেলুনে কাজ করতেন কুমিল্লার নন্দন কুমার। তার কাজের অনুমতি বা আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়োগকর্তা বা কফিলকে দিয়েছিলেন সাড়ে ছয় হাজার রিয়াল। যেন দ্রুত নতুন আকামা পেতে পারেন। কিন্তু সেই টাকা নিয়েও সময়মতো আকামা তৈরি করেননি নিয়োগকর্তা। ফলে অবৈধ হয়ে পড়েন নন্দর। আর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে বাধ্য হয়ে ফিরেছেন দেশে।
একই অবস্থা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্টু মিয়া, সাইদুল ইসলাম, নরসিংদির নাইম, হবিগঞ্জের ফারুক হোসেন, ঢাকার সাইফুল ইসলামের।
দেশে ফেরা অনেক কর্মীর অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য নিয়োগকর্তাকে টাকা দিলেও তারা সময়মতো তা করে দেয়নি। এমনকি পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা তাদের কর্মীর দায়িত্ব নেন না। উল্টো পুলিশকে বলেন, আকামা না থাকলে ভিসা বাতিল করে দেশে পাঠিয়ে দিতে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘চলতি বছর এখন পর্যন্ত ২২ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চলতি মাসেই ফিরলেন দুই হাজার ৬১৫ জন। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। যারা কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। আমরা আশা করছি তিনদিন পর সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের যে যৌথ বৈঠক হবে সেখানে নারী কর্মীদের পাশাপাশি পুরুষদের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করতে কাজ করতে হবে দুই দেশকে।’