`গণপরিবহন চলাচলে বাধা দিচ্ছে ট্রাক শ্রমিকরা’
২০ নভেম্বর ২০১৯ ১০:১৫ | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ১০:১৭
ঢাকা: ঢাকা মহানগরীতে গণপরিবহন চলাচলে ট্রাক শ্রমিকরা বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বাস মালিক সমিতি। সমিতির অভিযোগ, বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল থেকে ঢাকা থেকে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা গণপরিবহনগুলোকে চলাচলে বাধা দিচ্ছিল আন্দোলনকারী ট্রাক শ্রমিকরা। তবে কোথাও কোথাও পুলিশের সহযোগিতায় বাস চলাচল করলেও বাসের চালক ও সহকারীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঢাকা মহানগর বাস মালিক সমিতির দফতর সম্পাদক গোলাম সামদানী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আইন মেনে রাজপথে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের এই চলাচলকে বাধা দিচ্ছে আন্দোলনকারী ট্রাক শ্রমিকরা। তারা ঢাকা থেকে গাজীপুর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোকে সাতরাস্তা, মহাখালী এবং নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোকে শনির আখড়া এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বাধা দিচ্ছে। এমনকি তারা বাস থেকে যাত্রীদেরও নামিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশি সহায়তায় গাড়ি চালানোর চেষ্টা করছি। অনেক জায়গায় পুলিশ আমাদের সহায়তা করছে। কিন্তু কোথাও কোথাও বিপুল সংখ্যক শ্রমিকদের মাঝে গুটিকয়েক পুলিশ তেমন কিছু করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য ট্রাকচালকরা বিশৃঙ্খলা করছে। আমরা তাদেরকে সমর্থন করছি না বলে তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু বারবার বলেছি, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যদি আইন প্রণয়ন করে সেটি জনগণের স্বার্থে, আমাদের স্বার্থে। তাহলে তা আমরা মানব না কেন?’
তবে বাস মালিক সমিতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ ট্রাক কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতি। তাদের মুখপাত্র স্বপন হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাস মালিক সমিতির অভিযোগ সত্য নয়। কোথাও বাধা দেওয়ার মত ঘটনা ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘যাদের ইচ্ছা গাড়ি চালাবে, যাদের ইচ্ছা গাড়ি চালাবে না । এখানে আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। আমি এরই মধ্যে শনির আখড়া ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঘুরেছি। কোথাও এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ট্রাফিক মফিজ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে মহাখালী ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) সুবীর রঞ্জন দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘মহাখালী এলাকায় বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটলেও ভোরের দিকে হয়তো। আমরা তো সকাল ছয়টা থেকে ডিউটি শুরু করেছিলাম। এরপর থেকে এ ধরনের কোনো ঘটনা আমরা এখনও শুনিনি।’
তবে সকাল থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহনের বেশ সংকট দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে অফিসগামী যাত্রীরা।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন সড়ক পরিবহন আইন স্থগিত করে সংশোধনের জন্য ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (২০ নভেম্বর) ভোর ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছে তারা।