রাবি শিক্ষার্থীকে মারধর, ৩ দফা দাবিতে উত্তাল ক্যাম্পাস
১৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:১৩ | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:২৫
রাবি থেকে: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সোহরাব নামে এক শিক্ষার্থীকে কাঠের টুকরো দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বিচারের দাবিসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এসময় ‘আমার ভাইকে মারলো কেন প্রশাসন জবাব চাই’ সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেছেন। অনতিবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত সহ ছাত্রত্ব বাতিল করা, হলের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রভোস্টের পদত্যাগ, চিকিৎসার সকল খরচ প্রশাসনকে বহন করার দাবি জানান তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্যে বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এখন দুর্নীতিতে জর্জরিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চলে ক্যাডারদের অমানুষিক নির্যাতন। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, সোহরাব কী করেছিলো? ওর মত সাধারণ ছেলেদের ওপর ক্যাম্পাসের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মেধা বিকাশে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে মারধরের শিকার হোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সোহরাব। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ল্যাপটপ চুরির সন্দেহে ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাবসহ ফ্যাইনান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হলের ছাদ থেকে তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে সোহরাবকে নানা রকম কথা জিজ্ঞাসাবাদ করেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে তারা দুজন সোহরাবকে মারধর করেন। মারধরে সোহরাব রক্তাক্ত হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হাসপাতালে সোহরাবের সঙ্গে থাকা সহপাঠীরা জানান, সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। ডাক্তার বলেছেন, মাথার তিন জায়গায় সেলাই দেওয়া হয়েছে । তার রক্তক্ষরণ হওয়ায় আপাতত এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোহরাবের এক সহপাঠী বলেন, ‘গত দুদিন আগে ল্যাপটপ চুরি ঘটনায় সন্দেহের জের থেকেই সোহরাবসহ আরও কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন আসিফ লাক। একপর্যায়ে সোহরাবকে মারধর করা হয়।’
এদিকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত আসিফ বলেন, ‘আমার রুম থেকে গত দুদিন আগে চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক ও বন্ধুর একটি ল্যাপটপ চুরি হয়েছে। গত রাতে সোহরাব বহিরাগতের নিয়ে হলের ছাদে বসে গাঁজা সেবন করছিলো। আমরা তাদের সন্দেহের বশে জিজ্ঞেস করি কিন্তু এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।’