‘বিদেশে বেশি, তবে দেশেও গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হন’
১৪ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৫৬
ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, বিদেশে গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেশি। তবে দেশেও গৃহকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হন। বিদেশে এ সমস্যা সমাধানে এজেন্সিদের বলা হয়েছে, যারা বিদেশে যাবেন তাদের নিবন্ধন বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে।
বিদেশে নারী শ্রমিকদের অত্যাচার নির্যাতন সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সাংবাদিকদের একথা বলেন।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বিদেশে যে নারীরা মূলত বাসাবাড়িতে কাজ করেন সেখানে অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেশি। আমাদের দেশেও অনেক নারী যারা বাসাবাড়িতে কাজ করেন তারা নির্যাতনের শিকার হন। বাসাবাড়িতে কাজ করলে নারীদের অত্যাচার নির্যাতনের সম্ভাবনার মাত্রা বেশি হয়। এজন্য আমরা সব এজেন্সি কে বলছি, এবার বাধ্যতামূলক (ম্যান্ডেটরি) করে দেওয়া হচ্ছে। যারা বিদেশে যাবেন তাদের নিবন্ধন বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে এবং সেটা সরকারকে জানাতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জেদ্দাসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করা প্রবাসী নারীদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা বলেছে, সব নারী কিন্তু নির্যাতনের সম্মুখীন হয় না, কিছু কিছু নারী নিজেদের কারণেই নির্যাতনের শিকার হয়। বড় সমস্যা হল আমাদের নারীরা যখন বিদেশে যান তখন তারা ওই দেশের ভাষা বোঝেন না। ওরা কি খায় তা জানেন না। আচরণ বা ওই দেশের স্বাভাবিক নিয়ম সম্পর্কে তাদের জ্ঞান থাকে না। এরকম বহু জায়গায় গ্যাপ আছে। এই বিষয়গুলোতে নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠালে এই গ্যাপগুলো পূরণ করা সম্ভব। আমরা এখন এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি।
তিনি আরও বলেন, নারীরা সৌদি আরবে নির্যাতিত হয় তারা কিন্তু ওই দেশের পুলিশ স্টেশন বা কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো রিপোর্ট করেন না। অথচ সৌদিতে আইন-কানুন খুব শক্তভাবে পালন করা হয়। তারা যদি ওইখানে রিপোর্ট করেন তাহলে কিন্তু সেটার সমাধান হয়। আমি নিজে দেখেছি এই ঘটনায় তাদের কে তথ্য দিলে তারা দ্রুত ব্যবস্থা (কুইকলি একশন) নেয়।
সংবাদকর্মীরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চায় যে নির্যাতনের ফলে নারী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফেরত আসছে। এমন অবস্থায় নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নারী শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। সমাধানের পথ বের করার চেষ্টায় আছি।
তিনি আরও বলেন, দেশের বাইরে ৬ লাখ নারী শ্রমিক আছেন যার মধ্যে ২ লাখ ৭০ হাজার সৌদি আরবে কাজ করেন। বেশিরভাগ নারী শ্রমিক নির্যাতনের অভিযোগ আসছে সৌদি এবং দুবাই থেকে। বেসরকারি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ৫৩জন নারীর মৃতদেহ এসেছে। এর মধ্যে কতজন আত্মহত্যা করেছে আমরা জানি না। প্রবাসী শ্রমিকদের নির্যাতন থামাতে আমরা একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে বিদেশে আমাদের শেল্টার হোম তৈরি করা। ওই শেল্টার হোমে কোন নারী যেকোনো সময় আশ্রয় নিতে পারেন। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার জরুরি হট লাইন সার্ভিস চালু আছে।
টপ নিউজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন প্রবাসী নারী শ্রমিক প্রবাসে গৃহকর্মী নির্যাতন মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার