Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমবায়ের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী


২ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৪৬ | আপডেট: ২ নভেম্বর ২০১৯ ২০:৪১

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে সমবায়ের মাধ্যমেই আমাদের দেশের উন্নয়ন করতে পারব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। এভাবেই আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।

শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৮তম জাতীয় সমবায় দিবস ও জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০১৮’র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবায় দিবস উপলক্ষে বিআইসিসি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা আদর্শ গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প নিয়েছিলেন। একেবারে যারা গরিব তাদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। কিন্তু এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের যারা মালিক হবে তারা সমবায় করেই এ মালিকানা ভোগ করবে। যেন কেউ অহেতুক জমি-বাড়ি বিক্রি করতে না পারেন। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমবায়ের ভিত্তিতে যৌথভাবে যেন তারা তাদের নিজ নিজ যে সমস্ত পেশা, সেই পেশার কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা নিয়েছি।’ এরইমধ্যে প্রায় ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৪৯টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে সমবায় নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ, পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘সেগুলোকে কাজে লাগাতে হলে সমবায়ের ভিত্তিতে যত করতে পারব অপচয় কম হবে, বাজারজাত হবে। পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে পারব।’

সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘এ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে যদি খাদ্য প্রক্রিয়াজাত বা কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে পারি, তাহলে ঘরের যে সমস্ত জিনিস উৎপাদন হয় তার প্রতি মানুষের একটা স্বভাবজাত আকর্ষণ থাকবে। সেটি আমরা প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করতে পারি। বিদেশে রফতানি করতে পারি। দেশেও আমাদের বাজার সম্প্রসারণ হচ্ছে। কারণ আমাদের দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এখানকার যুগে ঘরে-বাইরে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করেন। কাজেই যদি কিছু প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পাওয়া যায়, যেটা রান্নার জন্য প্রস্তুত করা, যেটা সকলের জন্য কষ্টটা একটু লাঘব করে। এদিকে লক্ষ্য রেখেই একদিকে আমরা শিল্প-কলকারখানা গড়ে তোলা এবং অপরদিকে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।’

সমবায় সমিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যে সমস্ত সমবায় সমিতিগুলো যে সমস্ত পণ্য উৎপাদন করছে, সেগুলোকে আমরা যদি ব্যবহার বা প্রক্রিয়াজাত করতে পারি বা তার সঙ্গে যোগসূত্র করে দিতে পারি তাহলে কোনোভাবেই গ্রামে আর কেউ অবহেলিত থাকবে না। প্রতিটি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে।’

সমবায় ক্ষেত্রে জাতির পিতার বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ তুলে ধরার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি দেশের অনগ্রসর সম্প্রদায় তাদেরকেও সমবায়ের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করে সমবায় ভিত্তিতে তাদেরকে উৎপাদনমুখী করার কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমবায় অধিদফতরের কার্যালয় থেকে প্রতিটি উপজেলা পর্যন্ত সকল কার্যালয়কে আইসিটি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে এবং অনলাইনে কেনাবেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনলাইনে সমবায়ের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করণের বিষয়টা আমি কিছুক্ষণ আগেই উদ্বোধন করে দিয়ে এসেছি।’

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ৫টি উন্নয়ন প্রকল্পে গ্রামের দরিদ্র বিত্তহীন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা প্রদান করে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে বলেও অবহিত করেন।

এছাড়াও ক্ষুদ্র কৃষকদের উন্নয়নে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ নামে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তার কার্যক্রম বর্তমানে ১৭৪টি উপজেলায় বিস্তৃত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পল্লী অবকাঠামো সুবিধা ও সুবিধা বঞ্চিত ও দরিদ্র মানুষের জীবন মান উন্নয়নে পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকার ১০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ফলে আমাদের দেশে প্রত্যেকটা মানুষের যাতে আত্ম কর্মসংস্থান হয়, সে ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি বলেও প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে সমস্ত এলাকায় আমাদের গ্রিড লাইন নেই। সেখানে সৌর বিদ্যুৎ দিচ্ছি। তবে আমরা প্রায় ৯৩ ভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি।’

অবকাঠামোগত দিক থেকেও ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে বলেও অবহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষকে যেন আর কখনো কারও কাছে হাত পাততে না হয়। কারণ জাতির পিতা সমবায়কে গুরুত্ব দিতেন যাতে অধিক সংখ্যক মানুষ এখানে লাভবান হতে পারে।’

এ লক্ষ্যে বিদ্যমান সমবায় আইনকে যুগোপযোগী করার আহ্বান জানিয়ে সমবায় কাজে যারা দক্ষ, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তারা যেন সৎভাবে কাজ করেন, সে বিষয়ে আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য সমবায় সচিব কামাল উদ্দিন তালুকদারসহ অন্যরা।

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবায়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর