সৌদি আরব থেকে শূন্য হাতে ফিরেছে ১৮ হাজার শ্রমিক
২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১১:২৮ | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৩১
ঢাকা: ভাগ্য বদলের আশায় সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে স্বপ্নের দেশ সৌদি আরবে গিয়েছিলেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি তাদের। সৌদি আরবে গিয়ে কেউবা পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন, কেউবা দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। গত ৯ মাসে দেশে ফিরে এসেছেন ১৮ হাজার শ্রমিক। সর্বশেষ গত দুইদিনে পুলিশি ধরপাকড়ে গত দুদিনে প্রবাসী ৩৭৩ জন কর্মী ঢাকায় ফেরত এসেছেন। হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ২০০ জন এবং শনিবার রাতে ১৭৩ জন ফিরে আসেন।
কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বিমানবন্দরে জরুরি খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর সহায়তা দেয় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম। এ নিয়ে চলতি বছরে প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফেরত এলো।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) ফেরত আসাদের মধ্যে ছিলেন দুই ভাই নড়াইলের নয়ন ও শুক্কুর মোল্লা। এর মধ্যে নয়ন চার বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন রং মিস্ত্রির কাজ নিয়ে। মাত্র দুই মাস আগে ছোট ভাই শুক্কুর মোল্লাকে একই কাজে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুইজনকে শূন্য হাতে গতকাল দেশে ফিরতে হয়েছে।
নয়নের অভিযোগ, ছোট ভাই বাজার করতে বের হলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন। এ খবর শুনে ছুটে যান তিনি। কিন্তু সে দেশের পুলিশ কোনো কথা শোনেনি। তাদের দুই ভাইকে ধরেই দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ভোলার ফুয়াদ হোসেন দু বছর আগে ছয় লাখ টাকা খরচ করে ফ্রি ভিসার নামে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।
তিনি জানান, বৈধ আকামা থাকার পরেও তাকে গ্রেফতার করা হলো তিনি বুঝতে পারছেন না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে কথা বললে তাকে বলা হয়েছে, আপনারা এভাবে আসেন কেন? যেভাবে আসছেন, সেভাবেই সমাধান করেন।
স্বপ্ন ভঙ্গের এমন নানা সব ঘটনা প্রতিদিনই বিমানবন্দরে শুনতে হচ্ছে জানিয়ে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, সাধারণত ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করতে যাওয়ার প্রবণতা চলছে অনেকদিন ধরে। এভাবে কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়ে অনেকেই ফেরত আসতেন। কিন্তু এবার অনেকেই বলছেন, তাদের আকামা থাকার পরেও ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে যাওয়ার কয়েকমাসের মধ্যেই অনেককে ফিরতে হচ্ছে যারা খরচের টাকার কিছুই তুলতে পারেননি। এভাবে গিয়ে লোকজন যেন প্রতারিত না হয় সেটা সবাই মিলে নিশ্চিত করতে হবে। তার আগে দূতাবাস ও মন্ত্রণালয়ের উচিত ফেরত আসার কারণগুলো চিহ্নিত করে এগুলোর প্রতিকার করা।