ভারতে ফেনী নদীর পানি সরবরাহ স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
১৭ অক্টোবর ২০১৯ ২০:৩৫ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:১১
ঢাকা: সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পাদিত ফেনী নদীর পানি চুক্তি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন এক আইনজীবী। রিটে ফেনী নদী থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পানি সরবরাহ ও পাম্প বসানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখার নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
একই সঙ্গে মামলা চলাকালীন সময়ে ভারতে পানি সরবরাহ স্থগিত চাওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল এ রিটটি দায়ের করেন। তবে রিটের বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) নিশ্চিত করেছেন তিনি।
রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পররাষ্ট্র সচিব ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে আবেদনটির শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী মাহমুদুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন পত্রিকায় এসেছে চুক্তির আগেই অবৈধ ভাবে ২০১০ সাল থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের অন্তত ৩৪টি স্থানে পানির পাম্প স্থাপনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে প্রায় ৩০-৩৫ কিউসেক পানি তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খাবার পানি সরবরাহের জন্য ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি দিতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু সমস্যা হলো ওই পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে পানির পাম্প ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনার উপর বাংলাদেশের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকা আবশ্যক। অন্যথায় চুক্তির ব্যতয় ঘটিয়ে ভারত যদি ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে অধিক পরিমাণে পানি নেয়, সেক্ষেত্রে ফেনী নদীর মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতিসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ (এ) এর লঙ্ঘন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সাথে যেকোন রাষ্ট্রের কোনো চুক্তি যদি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় সেক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণ ক্ষমতা আছে উক্ত চুক্তির ওপর হস্তক্ষেপ করার। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, ১৯৭৪ সালে তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে ছিটমহল বিনিময় সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালে কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপের কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পাদিত ছিটমহল চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এই মামলাতেই শেষ পর্যন্ত ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ভারত সরকারকে ছিটমহল বিনিময়ে অনুমোদন দেয় এবং এর মাধ্যমে তারা একটি রেফারেন্স (নজির) সৃষ্টি করে যে, যেকোন বৈদেশিক চুক্তিতে হাইকোর্টের পূর্ণ ক্ষমতা আছে সেই চুক্তির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার যদি তা সংবিধানের সঙ্গে কোনভাবে সাংঘর্ষিক হয়। বাংলাদেশের হাইকোর্টের ও এ অধিকার রয়েছে বিধায় আমরা আদালতে রিটটি দায়ের করেছি।’