Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মাঠ পর্যায়ে’ আন্দোলনের ইতি বুয়েটে


১৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:৫০ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ২১:৪৭

বুয়েট থেকে: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবিতে চলমান ‘মাঠ পর্যায়ের’ আন্দোলনের ইতি টেনেছেন তার সহপাঠীরা। তবে আগামীকাল বুধবার (১৬ অক্টোবর) তারা সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দিতে গণশপথে অংশ নেবেন। পাশাপাশি আবরার হত্যার ঘটনায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম চার্জশিটে আসবে, তাদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত বুয়েট শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলেও জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বুয়েট শহিদ মিনারে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন- আবরার হত্যা: আন্দোলন চলবে কি না সিদ্ধান্ত বিকেলে

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত কয়েক দিনে আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করেছি, আমাদের ভাইয়ের লাশকে পর্দা হিসেবে ব্যবহার করে আড়ালে-অন্তরালে অনেক স্বার্থন্বেষী সংগঠন নিজেদের এজেন্ডাকে প্রমোট করা চেষ্টা করেছেন। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, এদের সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তারা দেশবাসীকে এসব স্বার্থান্বেষীদের এজেন্ডাতে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।

তারা বলেন, রাজপথে আমাদের অবস্থানকে দীর্ঘায়িত করে এসব অপশক্তিকে এই আন্দোলন ভিন্নখাত প্রবাহিত করার কোনো সুযোগ আমরা দিতে চাই না। বুয়েট প্রশাসনের সদিচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা আগামীকাল আমাদের মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনকে আপাতত ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে এক গণশপথে অংশ নেব। গণশপথের মাধ্যমে আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিতে রুখে দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হব।

এসময় আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন ইতি টানলেও আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো প্রশাসন বাস্তবায়ন করছে কি না, আমরা তা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করতে থাকব। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চার্জশিট দেওয়ার পর অপরাধীদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগ পর্যন্ত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কোনো রকম অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবে না।

আবরার হত্যার ঘটনার জের ধরে শিক্ষার্থীরা যেসব দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করছিলেন, সেগুলোর বাস্তবায়ন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল (সোমবার, ১৪ অক্টোবর) আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তায় সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ১০ দফা দাবি ছিল। এর মধ্যে ১, ৪ ও ৫ নম্বর দাবি ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে। আমরা দেখেছি, এরই মধ্যে আবরার হত্যার অপরাধী অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। তাদের কেউ কেউ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। অনেকের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আবরার হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ দেন। এসময় তারা বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ জানান। তারা বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তৎপর ছিলেন বলেই এত দ্রুত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এসব কারণে আমরা বিশ্বাস করি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার ব্যবস্থা তাদের স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যাবে এবং সুষ্ঠুভাবে বিচার সম্পন্ন করার মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, আমাদের বাকি দাবি-দাওয়াগুলো ছিল বুয়েট প্রশাসনের কাছে। আপনারা জানেন, আমরা পাঁচটি পয়েন্ট তাদের কাছে তুলে ধরেছিলাম। এরই মধ্যে বুয়েট প্রশাসনের তৎপরতা আমরা লক্ষ করেছি। জড়িতদের সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে, তদন্তের ভিত্তিতে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি নতুন কোনো অপরাধীর নাম উঠে আসে, তাহলে তাকেও আজীবন বহিষ্কারের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ফাহাদের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাব সাহায্য করা হবে— এই মর্মেও আমাদের কাছে নোটিশ এসেছে। এর পাশাপাশি আমাদের হলে হলে যে ‘রাজনৈতিক কক্ষ’গুলো ছিল, সেগুলো সিলগালা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যারা অবৈধ বোর্ডার ছিল, ছাত্রদের উদ্যোগে তাদের উৎখাত শুরু হয়েছে। আমাদের ৪ নম্বর দাবি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট যুক্ত করা যেন নির্যাতিতরা তাদের কথা সেখানে শেয়ার করতে পারে। সেটি এরই মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের পঞ্চম দাবি ছিল, হলে হলে সিসিটিভি স্থাপন। সেগুলো স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে, কয়েকটি হলে কাজ চলছে। এর পাশাপাশি আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, সিসিটিভি মনিটরিং করার জন্য প্রশাসনিক পদ তৈরি করা হোক।

আন্দোলন আবরার হত্যা বুয়েট মাঠ পর্যায়ের আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

‘আরও কঠিন পথ পারি দিতে হবে’
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৬

আরো

সম্পর্কিত খবর