Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাঁজরের হাড় ও পা না কেটে এবার বাইপাস সার্জারি


২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৯:৫৭ | আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২২:৫১

ঢাকা: এ বছরের ২৫ আগস্ট জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রথমবারের মতো পাঁজরের হাড় না কেটে সফলভাবে হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করতে সক্ষম হয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরই ধারাবাহিকতায় ওই পদ্ধতিতে তিনটি সফল অস্ত্রোপচার হয়। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাফল্যের খাতায় এবার যোগ হলো আরেকটি নতুন অধ্যায়। পাঁজরের হাড় ও পা না কেটে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বাইপাস সার্জারি হলো জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। বুধবার (২৬ সেপ্টম্বর) ডা. আশরাফুল হক সিয়ামের নেতৃত্বে সফল এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

বিজ্ঞাপন

ডা. আশরাফুল হক সিয়াম বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ধামরাইয়ের ৫০ বছর বয়সী আলামিন হার্টের দুটি ব্লক নিয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর আমাদের সার্জারি ইউনিট-৯ এ ভর্তি হন। আমরা ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাঁজরের হাড় ও পা না কেটে বাইপাস সার্জারি করতে সক্ষম হই। এ ধরণের সার্জারিতে সাধারণত পা কেটে শিরা নেওয়া হয় এবং সেটা বুক কেটে হৃদযন্ত্রে গ্রাফট দেওয়া হয়। কিন্তু এবার বুকের হাড় ও পা না কেটে MICS-CABG (MIDCAB) and EVH পদ্ধতিতে সফলভাবে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এই পদ্ধতির অস্ত্রোপচার সম্পর্কে জানিয়ে ডা. সিয়াম বলেন, ‘MICS-CABG (MIDCAB) ও EVH দুইটি আলাদা আলাদা পদ্ধতি। ‘MICS-CABG (MIDCAB) পদ্ধতিতে বাইপাস সার্জারিতে সাধারণত পায়ের গোড়ালি থেকে থাই পর্যন্ত পা কেটে শিরা নিয়ে বাইপাস করা হয়। কিন্তু EVH এর মাধ্যমে পা না কেটে ছোট একটা ছিদ্র করে এন্ডোসকপির মাধ্যমে এই শিরা তোলা হয়। এটি একটি নতুন পদ্ধতি। এর ফলে পায়ের কাটা ছেঁড়া কম হয়, ব্যাথা কম থাকে, ক্ষতস্থানে দাগ থাকে না, ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে এবং রোগী দ্রুত হাঁটাতে পারে। তবে এবারের সার্জারিতে ‘MICS-CABG (MIDCAB) এর পাশাপাশি EVH পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নুতন এই পদ্ধতির মাধ্যমে বুকের হাড় না কেটে বাইপাস সার্জারির ফলে রোগীর হাড় জোড়া লাগার কোনো ব্যাপার থাকে না, রক্তক্ষরণ কম হয়, ব্যাথা কম হয়, ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে, আইসিইইউ এবং হাসপাতালে থাকার সময় কমে যায় এবং রোগী দ্রুত সুস্থ্য হয়ে বাড়ি যেতে পারে। ফলে খরচও হয় কম।’

এর আগে ডা. সিয়াম এই হাসপাতালে বুকের হাড় না কেটে শুধু পায়ের গোড়ালি কেটেই বাইপাস সার্জারি করেছেন। কিন্তু এই প্রথম বুক এবং পা দুটিই না কেটে কেবল ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে বাইপাস করা হলো।

ডা. সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আলামিন সুস্থ আছেন। স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া করছেন, ব্যাথাও কম। সবকিছু ঠিক থাকলে শনিবার তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’

সরকারি হাসপাতালে এমন নতুন পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারের বিষয়ে ডা. সিয়াম ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বরাদ্দের কারণে হাসপাতালের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা সম্ভব হয়েছে। এবং আমরা সরকারি হাসপাতালেই গরিব রোগীদের সেবা দিতে পারছি।’

চার ঘণ্টা ধরে চলা ওই অস্ত্রোপচারে ডা. সিয়ামের সঙ্গে ছিলেন ডা. কাজী আবুল আজাদ, ডা. আসিফ, ডা. রুমু, ডা. ওয়াহিদা, ডা. আহসানারা, ডা. মঞ্জুর, ডা. ইমরান, ডা. ইসরাত। অ্যানেস্থেসিয়ায় ছিলেন ডা. আজাদ, ডা. রাজু এবং পারফিউশনে ছিলেন ডা. রুবাইয়াত।

এই অপারেশন সম্পর্কে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রামপদ সরকার বলেন, ‘এই প্রথম বাংলাদেশে এ ধরনের অপারেশন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসাপাতালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হলো। এটা কার্ডিয়াক সার্জারির জন্য অত্যন্ত সুসংবাদ। এর ফলে দেশের রোগীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।’

উল্লেখ্য, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গত ২৫ আগস্ট বুকের হাড় না কেটে প্রথম ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বুকের হাড় এবং পা না কেটে এবার বাইপাস সার্জারি সম্ভব হলো।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল পাঁজরের হাড় ও পা না কেটে বাইপাস সার্জারি

বিজ্ঞাপন

জীবন থামে সড়কে — এ দায় কার?
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫২

বাসচাপায় ২ কলেজছাত্র নিহত
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর