রোহিঙ্গাদের হাতে এনআইডি: ইসির ৩ কর্মী গ্রেফতার
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:১২ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া চার কর্মচারীর মধ্যে তিন জনকে এ সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ও তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার সঙ্গে আরেকজনের জড়িত থাকার তথ্য নিশ্চিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এক নারীসহ চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনেছিলাম। ঘটনার সঙ্গে তিন জনের জড়িত থাকার তথ্য নিশ্চিত হয়ে আমরা তাদের গ্রেফতার করেছি। কাল (সোমবার) তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। নারী কর্মচারীর জড়িত থাকার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তাকে আমরা গ্রেফতার করিনি।’
গ্রেফতার তিন জন হলেন— শাহীন, জাহিদ ও পাভেল বড়ুয়া। এদের মধ্যে শাহীন কোতোয়ালি থানা নির্বাচন কর্মকর্তা, পাভেল ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জাহিদ বন্দর থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অধীনে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কর্মরত আছেন। অব্যাহতি পাওয়া ফাহমিদা নাসরিনও কোতেয়ালি থানা নির্বাচন কর্মকর্তার অধীনে একই পদে আছেন।
আরও পড়ুন- চট্টগ্রামে ‘ইসিপাড়ায়’ গ্রেফতার আতঙ্ক
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খান জানিয়েছেন, চার জন আউটসোর্সিংয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়ে অস্থায়ীভাবে কর্মরত আছেন।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেনে আঞ্চলিক সার্ভার স্টেশন থেকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। স্টেশনের দোতলায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার অফিস।
সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপকমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা গ্রেফতার হওয়া ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি। জয়নাল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম প্রকাশ করেছেন। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনেছিলাম।’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদিনসহ তিন জনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন জেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। বাকি দু’জন হলেন— জয়নালের বন্ধু বিজয় দাশ ও তার বোন সীমা দাশ ওরফে সুমাইয়া। জয়নালের হেফাজতে থাকা নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্স করা একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়, যেটি বিজয় ও সীমার কাছে রেখেছিলেন জয়নাল। রাতেই ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় জয়নালকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জয়নাল আবেদিন আদালতে জবানবন্দি দেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জয়নালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোস্তফা ফারুক নামে নির্বাচন কমিশনের আরেকজন অস্থায়ী কর্মচারীকে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তার কাছ থেকেও নির্বাচন কমিশনের লাইসেন্স করা একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। মোস্তফা ফারুককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তদন্তকারী সংস্থা।