চমেকে বিএমএ’র কর্মসূচি: বায়োমেট্রিক হাজিরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৫ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে (বায়োমেট্রিক) হাজিরার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির এই হাজিরার বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণার পর এই সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটেছে। তবে এর সঙ্গে কারা জড়িত তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে চমেক হাসপাতালে স্থাপিত বায়োমেট্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। এর আগে চমেকের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শতভাগ হাজিরা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরই বিএমএ’র চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সংযোগ বিচ্ছিন্নের এই ঘটনা ঘটেছে।
চমেকে অধ্যক্ষ ডা. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সকল চিকিৎসকদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দেওয়ার মাধ্যমে শতভাগ উপস্থিতির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা বায়োমেট্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। কিন্তু আমরা চিকিৎসকদের মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের কথা অবহিত করেছি।’
সূত্রমতে, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক, চমেকের অধ্যক্ষ এবং সিভিল সির্জনকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, বুধবার কোনো চিকিৎসক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দেবেন না। আগের মতোই চিকিৎসকেরা সনাতন পদ্ধতিতে হাজিরা দিয়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকবেন। এরপর সংযোগ বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটে।
সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়টি উর্দ্ধতন পর্যায়ে অবহিত করে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত ৩ সেপ্টেম্বর একটা সার্কুলার জারি হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা নিশ্চিতের বিষয় দেখে চিকিৎসকদের পদোন্নতি বিবেচনা করা হবে। দেশের আর কোনো ক্যাডার সার্ভিসে এই নিয়ম নেই। চিকিৎসকদের জন্য এই বৈষম্যের প্রতিবাদে আমরা একদিনের প্রতীকী কর্মসূচী ঘোষণা করেছি। বু্ধবার কোনো চিকিৎসক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দেবে না। এই কর্মসূচির বিষয়টি আমরা টিকিৎসকদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।’
বায়োমেট্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন কোর ক্ষেত্রে বিএমএ’র কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন ফয়সাল ইকবাল।
গত জুলাইয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চালু হয় বায়োমেট্রিক হাজিরা।
গত সপ্তাহে নতুন দশটি মেশিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চমেক হাসপাতালের জন্য পাঠায়। এর পরপরই এসব মেশিন স্থাপন করে পুরোপুরিভাবে চালু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এসব মেশিন হাসপাতাল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যদপ্তর পর্যন্ত মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার, নার্স, ডেন্টাল সার্জন, কর্মকর্তা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীসহ প্রায় ১ হাজার ৭’শ জন কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে মেডিকেল অফিসার রয়েছে ২৬২জন, নার্স ৮৯২জন, ডেন্টাল সার্জন ৩জন, মেডিকেল টেকনোশিয়ান ২৬জন, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪০৮জন এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ৫৫ জন।