ডিজিটাল বিশ্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে র্যাবিটহোল
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:০৯ | আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৫:২৯
চলছে ডিজিটাল মিডিয়ার যুগ। সারাবিশ্বে মিডিয়া জগতে প্রবল বিক্রমে ছড়ি ঘোরাচ্ছে ডিজিটাল মিডিয়া। ইন্টারনেট অব থিংসের এই যুগে ডিজিটাল মিডিয়ার জয়জয়কার স্পষ্ট। ব্যবহারকারীদের হাতে যত ডিভাইস আছে তার প্রায় সবই উচ্চ গতির ইন্টারনেটে সংযুক্ত হচ্ছে। তাই ডিজিটাল মিডিয়ার চাহিদা স্বভাবতই তুঙ্গে। কিন্তু ডিজিটাল মিডিয়ার জয়জয়কারের স্রোতেও এতদিন দেশের বাইরে ছিল না কোনো বাংলাদেশি ডিজিটাল মিডিয়া। তবে এবার বাংলাদেশকে প্রায় ২০০ দেশে নিয়ে গেল দেশের জনপ্রিয় ডিজিটাল মিডিয়া র্যাবিটহোল বিডি (www.rabbitholebd.com)।
বিশ্বজুড়ে দর্শকদের মধ্যে বাংলাদেশি মিডিয়ায় অনুষ্ঠান দেখার আকুতি কম ছিল না। বিপরীতে বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ, বিশ্বকাপ, বিপিএলসহ বড় বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশি মিডিয়ায় দেশের বাইরে দেখা কঠিন ছিল এতদিন। সেই অভাব এবার পূরণ করছে র্যাবিটহোল। www.rabbitholebd.com ওয়েবসাইটে সাবস্ক্রাইব করেই এখন এসব ইভেন্ট দেখা যাবে দেশের বাইরে।
র্যাবিটহোল একটি অনলাইনভিত্তিক মিডিয়া। নিজস্ব অ্যাপ ও ওয়েবসাইট রয়েছে র্যাবিটহোলের। এছাড়া ইউটিউবে রয়েছে র্যাবিটহোলের নিজস্ব চ্যানেল। এতদিন বাংলাদেশের ভেতর কোনো ফি ছাড়াই ক্রিকেট ম্যাচ, ক্রিকেট বিশ্বকাপ, বিপিএল, ডিপিএল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখিয়ে এসেছে এই মিডিয়া।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভির অনুষ্ঠান ডিজিটাল মিডিয়ায় দেখা যায় র্যাবিটহোলের মাধ্যমে। এ বিষয়ে গাজী টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমান আশরাফ ফায়েজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জিটিভি যখন আমরা শুরু করি তখন আমাদের লক্ষ্য ছিল দর্শকদের প্রাধান্য দেওয়া, দর্শকের মনন ও চাহিদা পূরণ করা। আমরা যখন শুরু করেছিলাম আমাদের মূলমন্ত্র ছিল ‘যা দেখতে চান পাবেন’। তবে এই মূলমন্ত্র অনুযায়ী আমরা অনুষ্ঠান টিভি স্ক্রিনে দেখালেও সব দর্শকের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমাদের পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন— দেশের বাইরে আমাদের পরিবেশন মাধ্যমের অভাব ছিল। দেশের ভেতরেও এক শ্রেণির দর্শক শুধুই ইন্টারনেটে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্যও উপযোগী কোনো মাধ্যম আমাদের ছিল না।’
আশরাফ ফায়েজ বলেন, ‘শুধু জিটিভি নয়, এ বিষয়টি বাংলাদেশের টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সবার জন্যই সত্য। কারণ টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি খুব গুছিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে দর্শকদের কাছে যেতে পারছে না। এ পরিস্থিতিতে আমরা জিটিভি থেকে একটি কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। সে কারণেই র্যাবিটহোলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কন্টেন্ট ম্যাটার্সের সঙ্গে জিটিভি অংশীদার হয়। এই অংশিদারিত্বের অংশ হিসেবে কন্টেন্ট ম্যাটার্স আমাদের অনুষ্ঠান ডিজিটাল মাধ্যমে পরিবেশন করবে। সেখান থেকেই র্যাবিটহোলের প্রতিষ্ঠা। আমাদের কন্টেন্ট যদি কেউ দেশে ও দেশের বাইরে ডিজিটাল মিডিয়ায় উপভোগ করতে চান, র্যাবিটহোলের মাধ্যমেই তারা সে সুযোগ পাবেন।’
জিটিভির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ, বিপিএল, ডিপিএল ও ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচ সম্প্রচার করে দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায় র্যাবিটহোল। শুরুতে নিজস্ব লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ র্যাবিটিহোল বিডিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন খেলা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এছাড়া র্যাবিটহোলের ইউটিউব চ্যানেল র্যাবিটহোল স্পোর্টসে খেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও হাইলাইটসগুলো দেখার সুযোগ পান দর্শকরা। পরে ২০১৮ সালে র্যাবিটহোল তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.rabbitholebd.com) চালু করে। এই সাইটেই ক্রিকেট বিশ্বকাপের সব ম্যাচ প্রচার করে র্যাবিটহোল। এই সাইটেও রয়েছে বিশ্বকাপের সকল ম্যাচের হাইলাইটস ও গুরুত্বপুর্ণ অংশ। এছাড়া বিভিন্ন জনপ্রিয় অনুষ্ঠানও রয়েছে সাইটে।
র্যাবিটহোলের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কন্টেন্ট ম্যাটার্সের হেড অব অপারেশন নাজমুল আলম স্বরুপ বলেন, ‘ভারতের একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে শুধু সে দেশে একসঙ্গে ১৪ লাখ দর্শককে ক্রিকেট বিশ্বকাপ সরাসরি দেখিয়ে। আর র্যাবিটহোল বাংলাদেশে সাড়ে চার লাখ দর্শককে বিশ্বকাপের খেলা দেখিয়ে আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। বাংলাদেশ ও ভারতের জনসংখ্যা বিবেচনায় নিলে দেখা যাবে, র্যাবিটহোলই আছে প্রথম স্থানে।’
নাজমুল আলম স্বরুপ আরও বলেন, ‘দেশে আমরা র্যাবিটহোল ব্র্যান্ডটিকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য বাংলাভাষী দর্শকদের সুস্থ বিনোদন দেওয়া। আর এজন্য আমরা এবার দেশের বাইরে সম্পূর্ণ নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম নিয়ে হাজির হয়েছি। এ জন্য প্রাথমিকভাবে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি খেলার ওপর। তবে এর বাইরেও সব ধরনের বিনোদনমূলক কন্টেন্ট নিয়েই আমরা কাজ করছি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে ডিজিটাল জগতে শিক্ষামূলক কন্টেন্ট নিয়ে বড় পরিসরে কাজ করার ইচ্ছাও আমাদের আছে।’
কন্টেন্ট ম্যাটার্স সূত্রে জানা যায়, যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত র্যাবিটহোলে খেলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখা হয়েছে প্রায় ২০৭ কোটিরও বেশিবার।ইউটিউবে চ্যানেল ও নিজস্ব ওয়েবসাইটের পাশাপাশি র্যাবিটহোলের নিজস্ব অ্যাপও জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ পর্যন্ত ১১ লাখেরও বেশিবার এই অ্যাপ ডাউনলোড করেছেন গ্রাহকরা।
এছাড়া র্যাবিটহোল দেশের বাইরে সম্প্রচার শুরু করার ফলে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান টেস্ট ম্যাচটি দেখতে পেরেছেন দর্শকরা। এবার বাংলাদেশ-জিম্বায়ুয়ে-আফগানিস্তান টি টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজের সব ম্যাচও সারাবিশ্বের দর্শকরা দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলে।
এভাবেই সারাবিশ্বের দর্শকদের কাছে র্যাবিটহোল পৌঁছে যাচ্ছে। বিশ্ব জানছে, ডিজিটাল মিডিয়াতে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই।
টপ নিউজ বিশ্বে র্যাবিটহোল র্যাবিটহোল অ্যাপ র্যাবিটহোল দেশের বাইরে র্যাবিটহোল বিডি