‘বিএনপি যে রাজনৈতিক দেয়াল তুলেছিল, তা ভুলে যাওয়া সম্ভব না’
২১ আগস্ট ২০১৯ ১২:৪১ | আপডেট: ২১ আগস্ট ২০১৯ ১৩:২৯
ঢাকা: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও রাজনৈতিক সম্পর্কের ঘাটতির পেছনে বিএনপিকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বিএনপি ‘রাজনৈতিক দেয়াল’ তুলেছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্কে দেয়াল তুলেছে, সেই দেয়ালকে অনেক উঁচু করে দিয়েছে। সে কথা ভুলে যাওয়া বা সে দেয়াল এড়িয়ে যাওয়া— কোনোটিই আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটিই বাস্তবতা।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ও ২০০৪ সালের ২১ আগস্টকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দুই কলঙ্কিত ঘটনা আখ্যা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ আগস্ট ধানমন্ডিতে আর ২১ আগস্ট রাজপথে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে রক্তের স্রোত বইয়ে দেওয়া হয়েছিল। পঁচাত্তরে যেমন জাতির জনক ছিলেন হত্যাকারীদের প্রধান লক্ষ্য, তেমনি ২০০৪ সালে তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কলঙ্কিত এই দুই ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা, একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা।
সরকারের এই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সরকারি ও বিরোধী দলের মধ্যে কর্মসম্পর্কের যে ভীত, এই দু’টি ঘটনার মধ্য দিয়ে তা চিরদিনের জন্য বিনষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) জাতীয় নির্বাচন (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন) সামনে রেখে খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। খালেদা জিয়ার সন্তানের মৃত্যুর পর তাকে সান্ত্বনা দিতে ছুটে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু সেদিন একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, তা মানুষ দেখেছে। সেদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে, বাংলাদেশে সংলাপের দরজাই বিএনপি বন্ধ করে দিয়েছিল।
বিচারিক আদালতে রায়ের ১০ মাস পরও উচ্চ আদালতে এখনো এই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কাদের বলেন, বিচারিক আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। এখন এটার ডেথ রেফারেন্সের শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরি হচ্ছে। এরপর ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হবে। এটি একটি প্রক্রিয়াগত ব্যাপার।
এই মামলার মাস্টারমাইন্ডদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ আছে এবং আমরা আপিল করব। এই হত্যাকাণ্ড যারা সংঘটিত করেছে, সেই হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে আছে, তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনেই তারা সেদিন এই অপারেশন চালিয়েছিল। কাজেই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হলে মাস্টারমাইন্ডদেরও সর্বোচ্চ বিচার অনিবার্য।
বুধবার সকালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাতে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ড. কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবীর নানক ও আব্দুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা।
পরে আওয়ামী যুবলীগ, মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা ইউনিটগুলো একে একে শ্রদ্ধা জানায় ২১ আগস্ট নিহতদের প্রতি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ওবায়দুল কাদের টপ নিউজ বিএনপি রাজনৈতিক দেয়াল