Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাহিত্যে নোবেলজয়ী টনি মরিসন আর নেই


৬ আগস্ট ২০১৯ ২৩:৩৪ | আপডেট: ৬ আগস্ট ২০১৯ ২৩:৪৬

নোবেলজয়ী মার্কিন লেখক টনি মরিসন মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। স্থানীয় সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে নিউইয়র্কের মন্টিফোর মেডিকেল সেন্টারে তার মৃত্যু হয়।

বিবিসির খবরে বলা হয়, মরিসন বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতাজনিত কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার। তার মৃত্যুতে মার্কিন সাহিত্যঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

১৯৯৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান এই মার্কিন কথাসাহিত্যিক। এর আগে ১৯৮৭ সালে প্রকাশিত ‘বিলাভড’ উপন্যাসের জন্য এর পরের বছর পুলিৎজার ও আমেরিকান বুক অ্যাওয়ার্ড পান তিনি। পরে এই বই থেকে একই নামে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়।

এক বিবৃতিতে টনি মরিসনকে ‘যথার্থ পারিবারিক ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে উল্লেখ করেছে মরিসনের পরিবার। মৃত্যুর সময় স্বজনেরা তার পাশে ছিলেন বলেও জানানো হয় ওই শোকবার্তায়। বলা হয়, তার ‍মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি হলেও মরিসনের দীর্ঘজীবন ও অর্জনে তারা কৃতজ্ঞ।

মরিসনের দীর্ঘজীবনের সহকর্মী ও সম্পাদক রবার্ট গটলিব বলেন, তিনি একজন মহান লেখিকা ও নারী ছিলেন। আমি জানি না আমি তার কোন অংশটি বেশি মিস করব।

মরিসন তার সাহিত্যজীবনে ১১টি উপন্যাস লিখেছেন। তার প্রথম বই ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’ প্রকাশিত হয় ১৯৭০ সালে। তার বাকি উপন্যাসগুলো হলো— দ্য ব্লুয়েস্ট আই (১৯৭০), সুলা (১৯৭৩), সং অব সলোমান (১৯৭৭), টার বেবি (১৯৮১), বিলাভড (১৯৮৭), জাজ (১৯৯২), প্যারাডাইস (১৯৯৭), লাভ (২০০৩), ‍এ মার্সি (২০০৮), হোম (২০১২) ও গড হেল্প দ্য চাইল্ড (২০১৫)।

উপন্যাস ছাড়াও শিশুদের জন্য গল্প লিখেছেন মরিসন। লিখেছেন ছোট গল্প, নাটক, অপেরা, নন-ফিকশন। তার লেখা নন-ফিকশনের মধ্যে ‘প্লেয়িং ইন দ্য ডার্ক: হোয়াইটনেস অ্যান্ড দ্য লিটারারি ইমাজিনেশন’ (১৯৯২) ও ‘দ্য অরিজিন অব আদারস’ (২০১৭) এবং মরিসনের সম্পাদিত ‘বার্ন দিস বুক: পেন রাইটারস স্পিক আউট অন দ্য পাওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ (২০০৯) পাঠপ্রিয়তা পেয়েছে।

বিজ্ঞাপন

একটি প্রকাশনা সংস্থায় সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু মরিসনের। পরে ধীরে ধীরে লেখালেখিতে যুক্ত হন। পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন শিক্ষকতাকেও। একসময় লেখালেখি ও শিক্ষকতা একসঙ্গে চালিয়ে গেছেন তিনি। সর্বশেষ বিশ্বখ্যাত প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত ছিলেন তিনি।

লেখালেখির পাশাপাশি বর্ণবাদ, সামাজিক বৈষম্য, রাজনীতি ও অর্থনীতির মতো বিষয়গুলোতেও সরব ছিলেন মরিসন। মার্কিন সমাজে বর্ণবাদের যে বীজ প্রোথিত রয়েছে, সে সম্পর্কে তার উক্তি ছিল, ‘এই দেশে আমেরিকান মানেই শ্বেতাঙ্গ। বাকি সবাই এই সংজ্ঞার বাইরে।’

নোবেল ও পুলিৎজার ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন টনি মরিসন। ২০১২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ও পান তিনি।

মরিসন একবার বলেছিলেন, ‘আমরা মরে যাই। এটাই হয়তো জীবনের অর্থ। কিন্তু আমাদের রয়েছে ভাষার শক্তি। হয়তো সেই শক্তিই জীবনের পরিধি ঠিক করে দেয়।’

মরিসন তার বইয়ে লিখেছেন, ‘জীবনের কোনো না কোনো একটি সময়ে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করাটাই যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। কোনো ছবি তোলার দরকার নেই, কোনো কিছু আঁকার দরকার নেই। এমনকি কিছু মনে রাখারও দরকার নেই। শুধু দেখা, দেখাটাই যথেষ্ট।’ জীবনের সেই ধাপেই হয়তো পৌঁছে গিয়েছিলেন বরেণ্য এই ভাষা শিল্পী। আর সেখান থেকেই পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।

টনি মরিসন টপ নিউজ নোবেলজয়ী মার্কিন সাহিত্যিক

বিজ্ঞাপন

দেশপ্রেম ও মেধা পাচার
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর