ব্রাহ্মণকে বিয়ে করে কারাদণ্ড পাওয়া হরিজন স্বামীর জামিন হাইকোর্টে
১ আগস্ট ২০১৯ ১২:০৭ | আপডেট: ১ আগস্ট ২০১৯ ১৩:২৯
ঢাকা: ব্রাহ্মণ বর্ণের মেয়েকে বিয়ে করার পর শ্বশুরের দায়ের করা অপহরণ মামলায় ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হরিজন তুষার দাসকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে তুষার দাসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, স্বামী তুষার দাস হরিজন সম্প্রদায়ের ও স্ত্রী সুষ্মিতা ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের। দু’জনে ভালবেসে বিয়ে করেন প্রায় দুই বছর আগে। তাদের এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি মেয়ের বাবা-মা। এ কারণে তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন মেয়ের মা।
অপহরণের এই মামলায় তুষারকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্য়াতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক। সুম্মিতা দেবনাথ স্বেচ্ছায় তুষার দাসকে বিয়ে করার কথা বললেও তার কথা আদালত আমলে নেননি।
১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়ে রায়ে আদালত বলেন, সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামি তুষার দাস ওরফে রাজ ভিকটিম সুষ্মিতা ওরফে অদিতিকে অপহরণ করে নিয়ে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আসামি শিশু সুষ্মিতাকে বিয়ে করবেন— এই আশ্বাস দিয়ে অপহরণ করেছেন। যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এ কারণে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো। তবে আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে ওই দায় থেকে খালাস দেন আদালত।
গত ৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তুষার। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তিনি আপিল করেন। এরপর স্বামীকে কারামুক্ত করতে তিন মাসের কন্যা শিশুকে নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন স্ত্রী সুষ্মিতা দেবনাথ।
সুষ্মিতা দেবনাথ বলেন, আমার একটাই অপরাধ, আমি ব্রাক্ষণ বর্ণের মেয়ে হয়ে হরিজন বর্ণের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। আইনের মারপ্যাঁচে আমাদের জীবন আজ বিপন্ন। ৮৮ দিন বয়সের শিশু সন্তান নিয়ে আমাকে ফেরারি হয়ে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে। মিথ্যা মামলা থেকে আমার স্বামীর মুক্তি চাই।