বগুড়ায় কমছে নদীর পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
২৯ জুলাই ২০১৯ ১০:১৪ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ১০:৪৫
বগুড়া: বগুড়ায় কমতে শুরু করেছে যমুনা ও বাঙ্গালি নদীর পানি। শুরু হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধসহ অন্যান্য আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বন্যার্তরা ঘরে ফেরার প্রস্তুতি। তবে পানি কমতে শুরু করলেও বেড়েছে বন্যার্তদের দুর্ভোগ। বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেকেই ঘরে ফিরে যেতে পারছে না। নষ্ট হয়েছে ফসলী জমি, দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য সংকট।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ সারাবাংলাকে জানান, সোমবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত যমুনার পানি কমে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বাঙ্গালি নদীর পানি কমলেও এখনও বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার যমুনা ও বাঙ্গালি নদীবেষ্টিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, গাবতলী ও শেরপুরের বিভিন্ন উপজেলায় ২৩টি ইউনিয়নের ২৫৪টি গ্রামের ৬৭ হাজার ৫০৭টি পরিবারের ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৪৪ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নদী ভাঙ্গনে তিন উপজেলায় ১৪৫টি আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৬৩০ ঘরবাড়ি। বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন ২ হাজার ৯শ পরিবার। অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছে ৯২৩ পরিবার। বন্যায় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ এবং ২০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক, ১৮৮ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ৭৭.৬০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা এবং ১১টি ব্রীজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এবারের বন্যায় ২৩ হাজার ৩০ হেক্টর জমির পাট, আউস ধান, বীজতলা, মরিচ, আখ ও বিভিন্ন সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ২ হাজার ৩৩০টি ল্যাট্রিন ও ২ হাজার ৭৩৬টি টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া সাপে কেটে এবং বন্যার পানিতে পড়ে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের।
জেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যা কবলিত এলাকায় ১ লাখ ২৫ হাজার গরু, মহিষ, লক্ষাধিক ছাগল, ১০ হাজার ভেড়া পানিবন্দী রয়েছে। এছাড়া ৪ লক্ষাধিক হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশুপাখি পানিবন্দী হয়ে আছে।
বাঁধে আশ্রয় নেয়া মানুষদের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া পানি বিশুদ্ধকরণ ৩৬ হাজার ৩৫০টি ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ৩২টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ জানান, এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট ও গাবতলী উপজেলায় ৮৫০ মেট্রিক টন জিআর চাল, ৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, জিআর ক্যাশ ১২ লক্ষ টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয়ের জন্য ১লক্ষ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।