Friday 03 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অভ্যাসগত অপরাধী না হলে, সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত’


২৭ জুলাই ২০১৯ ১৭:৪৩ | আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ২০:৪৪

ঢাকা: আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের সংশোধনের মাধ্যমে সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে এনে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়ার এখনই সময়। আর এ ক্ষেত্রে বিচারকদের জন্য উপযুক্ত হাতিয়ার হবে ‘দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স-১৯৬০’ আইনটি।

শনিবার (২৭ জুলাই) সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি, সুপ্রিমকোর্ট ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশ (জিআইজেড) আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, অভ্যাসগত অপরাধী না হলে তাকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া উচিত।

‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স-১৯৬০’ আইনটি কার্যকর বাস্তবায়নে করণীয় নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সুপ্রিমকোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মসের প্রধান বিচারপতি ইমান আলী বলেন, ‘সকল অপরাধীদের নির্বিশেষে কারাদণ্ডের পরিবর্তে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিকল্প পন্থাও অবলম্বন করা প্রয়োজন। আর তা করতে হলে ‘দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিনেন্স-১৯৬০’-এর মতো একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, তিন বছর কিংবা তার কম সাজা হলে নানারকম শর্ত দিয়ে প্রবেশন অফিসারদের মাধ্যমে এসব আসামিদের জামিন দেওয়া যেতে পারে। তাতে কারাগারে অতিরিক্ত চাপ কমে আসবে।

আর যাদের জেলের ভাত খাওয়ার শখ নেই তারা এসব শর্ত মেনে সেই সুযোগটি নেবেন।

বিচারপতি ইমান আলী বলেন, অনেকেই এই আনটি সম্পর্কে জানতেন না বা অবগত ছিলেন না। যেখানে সাজার পরিমান কম সেখানে এ আইনের প্রয়োগ করা সম্ভব। তবে যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডের বেলায় এটি প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

আইনটি ১৯৬০ সালের কিন্তু এখনো এটি তেমন প্রয়োগ হয়নি। এটি প্রয়োগ এখন সময়ের দাবি। এ আইনটি সম্পর্কে অনেকই জানতেন না।

বিচারকদের পাশপাশি এ আইনের বিষয়ে আইনজীবীদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

কারাবন্দি হ্রাস করে কারাগারের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় এ আইনটিকে একটি কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জিআইজেড বাংলাদেশ সম্পর্কিত প্রকল্পের পরিচালক উম্মে কুলসুম বলেন, ‘প্রবেশন অব অফেন্ডার্স অর্ডিন্যান্স-১৯৬০’ এর বিধান অনুসারে যদি প্রবেশনের আওতায় কারাবন্দিদের মুক্তি দেওয়া হত তাহলে ২০১৬ সালে শুধুমাত্র বন্দিদের খাওয়া খরচ বাবদ দৈনিক ৫৪ টাকা হিসেবে যে ২৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তা কারাগারের উন্নয়নে ব্যয় করা যেত।’

তিনি বলেন, ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিটের তথ্যমতে ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের কারাগারগুলোতে মোট ১৯ হাজার ৬৫৩ সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি ছিল। এর মধ্যে দুই বছরের নিচে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৫৪৬ জন।’

এ আইনের বিষয়ে সেমিনারে বক্তারা বলেন, একজন আসামি দোষি প্রমাণিত হলেও সে জেলে গেলে সমাজের কী লাভ হবে, বাদির কী লাভ হবে। জেলে না গেলে কী লাভ হবে সেটিও বিচারকের দেখা উচিত। তার পারিবারিক তথ্যও নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে জামিন দিলে সে যদি তার শর্তের মধ্যে থেকে নিজেকে সুধরে নেয় তাহলে সেটি বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন বক্তারা।

সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নল মো. আবরার হোসেন, সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচলক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রুল অব ল প্রোগ্রামের প্রধান প্রমিতা সেনগুপ্তসহ অনেকে।

অপরাধ বিচারপতি

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর