বামজোটের মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ে পুলিশের বাধা
১৪ জুলাই ২০১৯ ১৯:১৩ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ১৯:১৯
ঢাকা: গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা পূর্বঘোষিত জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে বামজোটের দুই কর্মী আহত হয়েছেন।
রোববার (১৪ জুলাই) বামজোটের নেতাকর্মীরা জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে সচিবালয়ের সামনে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। এর আগে গত ৭ জুলাই আধাবেলা হরতাল পালন শেষে গ্যাসের অযোক্তিক মূল্যবৃদ্ধি ও সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে ১৪ জুলাই সমাবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
এদিকে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম জোটের উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জনগণের সাথে মশকরা করছেন। এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য এলএনজি আমদানীর অযুহাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হলো। আমাদের দেশে কেন এলএনজি আমদানির প্রয়োজন হলো? দেশে যে পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস আছে সেগুলোকে যদি আমরা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমাদের দেশে জ্বালানির সমস্যা হওয়ার কথা না।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বাপেক্স ও পেট্রোবাংলাকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সিলিন্ডারের গ্যাস এলপিজি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে লুটপাটের জন্য। সরকার যদি গ্যাসের দাম না কমান তাহলে ১৯ জুলাই সারাদেশের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিনিধি সভার পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘গত ১০ বছরে এই সরকার ৭ বার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। অথচ সরকার যদি পেট্রোবাংলাকে কাজে লাগাতে পারতো তাহলে আজ গ্যাস আমদানীর প্রয়োজন হতো না। জ্বালানি ক্ষেত্রকে সরকার লুটপাটের একটি অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে। ব্যবসায়ীদের মুনাফা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে। ’
এদিকে সমাবেশ শেষে তারা জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে গেলে সবিচালয়ের সামনে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে বামজোটের দুই কর্মী আহত হন। এ সময় বামজোটের নেতারা দৃঢ়ভাবে ঘেরাও কর্মসূচি দিয়ে বিজয় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরই অংশ হিসেবে ১৯ জুলাই সারাদেশের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিনিধি সভার কর্মসূচি গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ সময় গণসংহতি আন্দোলনের সম্বনয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যদি দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করা যায় তাহলে বছরে জ্বালানি খাত থেকেই ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হয়। সেই সাশ্রয়ের দিকে না গিয়ে আমরা গ্যাস আমদানি করছি এবং ৯ হাজার কোটি টাকার বেশি রেট চাপিয়ে দিয়ে সাধারণ জনজীবন, শিল্প, কৃষিসহ সমগ্র উদপাদন খাতকে এক ধরনের চাপের মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা আজকে ঘেরাও কর্মসূচি করলাম পরবর্তীতে সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।
রোববার জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নেওয়া দলগুলো হলো- গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), কমিউনিস্ট পার্টিসহ কয়েকটি বামদল।
সারাবাংলা/পিটিএম