দুই মাসে বজ্রপাতে মৃত্যু ১২৬, ধান কাটতে গিয়ে বেশি
৬ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৩ | আপডেট: ৬ জুলাই ২০১৯ ১৮:৪৩
ঢাকা: গত মে ও জুন মাসে সারাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ১২৬ জন। এর মধ্যে ২১ জন নারী, ৭ জন শিশু এবং ৯৮ জন পুরুষ। এ সময় আহত হয়েছেন ৫৩ জন। সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলায়। এখানে গত দুই মাসে বজ্রপাতে মারা গেছেন ১৬ জন।
শনিবার (৬ জুলাই) সেভ দ্য সোসাইটি এন্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের স্ক্রল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের তথ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম বলছে, কিশোরগঞ্জের পর সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল জেলায় বজ্রপাতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। মে মাসে এসব জেলায় নারী ৯ জন, শিশু ৩ জন এবং ৪৮ জন পুরুষ মারা গেছেন। একই সঙ্গে মে মাসে আহত হয়েছেন ২৮ জন। জুন মাসে মারা গেছেন মোট ৬৬ জন। এর মধ্যে নারী ১২ জন, শিশু ৪ জন এবং ৫০ জন পুরুষ। এছাড়া, জুন মাসে বজ্রাঘাতে মোট ২৫ জন আহত হয়েছেন।
ধান কাটার সময় বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম। এরপর বেশি বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় মাছ ধরতে গিয়ে। এছাড়া, পর্যায়ক্রমে মাঠে গরু আনতে গিয়ে এবং টিন ও খড়ের ঘরে অবস্থান ও ঘুমানোর সময় বজ্রাঘাতে বেশি মানুষ মারা গেছেন। একই সঙ্গে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় অজ্ঞতাবশত লম্বা গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়ার সময় গাছে বজ্রপাত হওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন, কিশোরগঞ্জে ১৬ জন। এরপর হবিগঞ্জে ৩ জন, রাজশাহীতে ১০জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯ জন, পাবনায় ৬ জন, দিনাজপুরে ৭ জন, নীলফামারীতে ৪ জন, জামালপুরে ৪ জন, শেরপুরে ৪ জন, নওগাঁয় ৬ জন, সিরাজগঞ্জে ৫, নারায়ণগঞ্জে ৫ জন, মৌলভীবাজারে ৩ জন, খুলনায় ৪জন, সাতক্ষীরায় ১১ জন ও টাঙ্গাইলে ৪ জনসহ বিভিন্ন জেলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সংগঠনটি বজ্রপাতের সময় করণীয় বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়ে জানিয়েছে, যারা ক্ষেতখামারে কাজ করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। বাড়ির ছাদ কিংবা উঁচু স্থানে থাকলে দ্রুত সেখান থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে যেতে হবে। পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া বেশি নিরাপদ। তবে পাকাবাড়ি সুউচ্চ হলে সেক্ষেত্রে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। বজ্রপাতের সময় জানালার কাছে না থাকাই ভালো। পায়ে রাবারের স্যান্ডেল পরে থাকা এবং পানি ও যে কোনো ধাতববস্তুর যেমন সিঁড়ির বা বারান্দার রেলিং, পানির কল ইত্যাদির স্পর্শ থেকে করা যাবে না। বিদ্যুৎ পরিবাহী যে কোনো বস্তুর স্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। পুকুর বা জলাশয়ে থাকা নিরাপদ নয়। বজ্রপাতে বাড়ির ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র যেগুলো ইলেকট্রিক সংযোগ বা ডিসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা ভালো। এগুলো বন্ধ থাকলেও স্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে।
মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকলে যদি বজ্রপাত হওয়ার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে কানে আঙ্গুল দিয়ে চোখ বন্ধ করে নিচু হয়ে বসে থাকতে হবে। তবে, মাটিতে শোয়া যাবে না, কেননা মটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ির মধ্যে থাকায় নিরাপদ। তবে মনে রাখতে হবে গাড়ির ধাতব কোনো অংশের সংস্পর্শ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সারাবাংলা/এসএইচ/জেএএম