Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থবছরের প্রথম দুই দিনেই ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিল সরকার


৩ জুলাই ২০১৯ ১৭:৩৮ | আপডেট: ৩ জুলাই ২০১৯ ১৮:১৫

ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুর প্রথম দুই দিনে ব্যাংক খাত থেকে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে প্রথমদিন নেওয়া হয়েছে ৫’শ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় দিন দেড় হাজার কোটি টাকা। এই ঋণের বিপরীতে শতকরা সুদ দিতে হবে ৭ টাকা ৯৪ পয়সা। দেশের ১৫টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ওই কর্মকর্তা জানান, নতুন অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া প্রাক্কলন গত বাজেটের তুলনায় বেশি। সরকারের বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক নির্ভরতা বেড়েছে। পাশাপাশি ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধে খরচও বেছে। এর ফলে সরকারি ঋণের যোগান দিতে গিয়ে বেসরকারিখাতে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে আসছে। তবে, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা সরাসরি কথা বলতে রাজি হয়নি।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গেল অর্থবছরের শেষ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাংক খাত থেকে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল। এরমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেই দেওয়া হয়েছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে আগামী আরো কয়েক মাস বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাজারে নানাভাবে টাকার যোগান দেওয়া হবে।
বড় ধরনের নগদ টাকার সঙ্কট যেনো না হয় সেজন্য রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর টাকার যোগান অব্যাহত রাখা হবে। একই সঙ্গে সরকারের ঋণের যোগান দিলে অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে সরকারের ঋণ আকারে টাকার যোগান দেওয়া হলে বাজারে নগদ টাকার প্রবাহ অনেক বেড়ে যায়। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক টাকা বের করা হলে বাজারে সাড়ে সাত টাকার প্রভাব পড়ে।
ব্যাংকগুলোর বর্তমান পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপ বেড়ে গেলেও মুদ্রাবাজারের স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

বিজ্ঞাপন

এখানে উল্লেখ্য, রেপো (পুন:ক্রয়চুক্তি) ও রিভার্স রেপো (বিপরীত পুন:ক্রয়চুক্তি) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের অন্যতম হাতিয়ার। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো রিজার্ভ ব্যাংক থেকে যে সুদে স্বল্পমেয়াদী ঋণ নেয় তাকে বলে রেপো রেট। তেমনি ব্যাংকগুলি তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ রিজার্ভ ব্যাংকে রেখে যে হারে সুদ পায় তাকে বলে রিভার্স রেপো রেট।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক খাতে ৪৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা ৩০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। কারণ, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ঋণ নেয়া হয়। ফলে, ব্যাংক খাত থেকে কম ঋণ নিতে হয়েছে। তবে, গত বছর ব্যাংক খাত থেকে কি পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়েছে তার চূড়ান্ত হিসাব পেতে আরো দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জনে অর্থবছরের প্রথম দুই দিনেই দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুই বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের মাধ্যমে ১৫টি ব্যাংকের কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বড় অঙ্কের ঘাটতি বাজেট দেওয়ায় প্রতি বছরই সরকারের দেশি বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। আর সেই সাথে বাড়ছে এসব ঋণের সুদের খরচ। বিশ্লেষকদের মতে, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ঋণ নির্ভরশীলতা বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাচ্ছে। আর এতে কমে যাচ্ছে প্রকৃত উন্নয়ন খরচ। আবার স্থানীয় ব্যাংক থেকে অতিমাত্রায় ঋণ নেওয়ায় ব্যাংকের প্রকৃত বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম

২০১৯-২০ অর্থবছর ব্যাংক ঋণ সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর