Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিটের ‘ছুপা রুস্তম’ যাত্রী আর কত!


২৭ জুন ২০১৯ ০৭:৫৮ | আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০৮:০০

ঢাকা: ট্রেনে আসনবিহীন এক ধরনের টিকিট দেওয়া হয়। যাকে বলে স্ট্যান্ডিং টিকিট। এই সুবিধায় অনেক যাত্রী ট্রেনে চাপেন। দাঁড়িয়ে বা ঝুলে এদের যাত্রার কারণে আসনের যাত্রীরা বসতে পারেন না।

ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া অবৈধ- এমন আইন রয়েছে। তবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোফাজ্জল হোসেন বলেছেন, রেলের একটি সিদ্বান্ত হয়েছে, যেখানে ৩০ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া যাবে।

তবে রেলে দাঁড়িয়ে ৩০ শতাংশ নয় তার চেয়ে বেশি যাত্রী ভ্রমণ করেন –এমন কথা বলছেন রেলের নিয়মিত যাত্রীরা। আর আন্তঃনগর ট্রেনে কোনো স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয় না- এটা বলেছেন রেলপথ সচিব।

এদিকে সচিব স্ট্যান্ডিং টিকিটের পক্ষে যুক্তি তুলে বলেন, বাইরের দেশেও প্রচুর যাত্রী ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিটে যায়। তবে ট্রেন যাত্রার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে অনেকেই বলছেন, স্ট্যান্ডিং যাত্রীর (আসন বিহীন) সাথে টিকেট ছাড়া অবৈধ যাত্রী (ছুপা রুস্তম) থাকে। এই দুই শ্রেণির যাত্রীর কারণে সিটের যাত্রীদের অনেক সময় ভোগান্তি বা হয়ারানিতে পোহাতে হয়।

‘তাহলে দুর্ঘটনায় পড়া উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন কি করে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে আসছিল?’- যা রেলপথমন্ত্রীও বলেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ওই সময় ঢাকা-সিলেট সড়কপথে একটি সেতু ভাঙা থাকায় বাস চলাচল বন্ধ ছিল। যে কারণে ওইদিন উপবনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছিল।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন রেল বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সোচ্চার থাকেন। তিনি বলছেন, বিনা টিকিটের যাত্রী ও স্ট্যান্ডিং টিকিটের যাত্রী মিলে ‘ছুপা রুস্তম’। তাদের দেখলে বুঝার উপায় নেই- কার টিকিট আছে আর কে বিনা ভাড়ায় ভ্রমণ করছেন। ট্রেন চলন্ত অবস্থায় ভিড়ের কারণে টিকিট চেক করা প্রায় অসম্ভব। যে কারণে পুরো বিষয়টি ডালে-চালে মিলে খিচুড়ি হয়ে সবার কাছে হজম হয়ে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘রেলের হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসানের তুলনায় স্ট্যান্ডিং টিকিটের আয় নস্যি মাত্র। অথচ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। ‘যাত্রীর অনুরোধে দেওয়া হলো’ এমন ব্যবস্থা হাস্যকর।

রেল দীর্ঘদিন ধরে গোঁজামিল দিয়ে এই সিস্টেম চালাচ্ছে। এতে বৈধ যাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়ে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন।

যদিও রেল সচিব দাবি করেছেন, আন্তনগর ট্রেনে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হয় না। কিন্তু মাহবুব কবির মিলন তার এক রেলযাত্রার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘পরিবার নিয়ে একবার তূর্ণা’ ট্রেনে যাওয়ার সময় বার্থের করিডরে দেখলাম অসংখ্য লোক শুয়ে, বসে ও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। ওই যাত্রায় কেউ আমরা টয়লেটে যেতে পারিনি। আর অবৈধ স্ট্যান্ডিং টিকেট দেওয়া হয় নন এসির জন্য। সব গিয়ে দাঁড়ায় এসি কোচে, তার বেশিরভাগই ‘ছুপা রুস্তম।’

তিনি রেলের একটি ধারা উল্লেখ করে জানান, ‘১৮৯০ সালের রেল আইনে রয়েছে এমন একটি ধারা রয়েছে, যেখানে স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি অবৈধ।’

রেলওয়েতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের সময় আন্তঃনগর ট্রেনগুলো অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে চলন্ত অবস্থায় বিকল হয়ে গিয়ে শিডিউল বিপর্যয় ঘটায়। এরকম সমস্যায় পড়া ট্রেনগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই উত্তরাঞ্চলের। এর মধ্যে লালমনি এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেস বেশ কয়েকবার যাত্রীচাপে লাইনে বিকল হয়ে পড়েছিল।

সারাবাংলা/এসএ/পিটিএম

ছুপা রুস্তম ট্রেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর