২ বছরে সিজারিয়ান বেড়েছে ৫১ শতাংশ, অপ্রয়োজনীয় ৭৭ শতাংশ
২০ জুন ২০১৯ ২২:৩২ | আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ২৩:২৯
ঢাকা: ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতিদের সন্তান জন্মদান বা সিজারিয়ানের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যেসব প্রসূতির প্রসব করানো হয়েছে, তাদের ৭৭ শতাংশের ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচার ছিল অপ্রয়োজনীয়। অন্যদিকে, একই সময়ে প্রায় তিন লাখ নারী কেবল আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় প্রয়োজন থাকলেও সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দিতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। সংস্থাটি জানায়, ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩১ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে এই সংখ্যা বেড়েছে ৫১ শতাংশ। এ বছরে প্রায় আট লাখ ৬০ হাজার প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার বা সিজারিয়ান ছিল অপ্রয়োজনীয়।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং নবজাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ইশতিয়াক মান্নান বলেন, বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রায় ৮০ শতাংশ নবজাতকেরই জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। এর জন্য আংশিকভাবে দায়ী বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতের অব্যবস্থাপনা ও কিছু অসাধু চিকিৎসক দায়ী। তাদের কাছে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার বা সিজারিয়ান একটি লাভজনক ব্যবসা।
ড. মান্নান আরও বলেন, শিশুজন্মে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ফলে ইনফেকশন, মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানী, জমাট রক্ত ইত্যাদির কারণে সুস্থতা ফিরে পেতে প্রাকৃতিক প্রসবের তুলনায় অনেক দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হয় এবং মা ও শিশু উভয়কেই ঝুঁকিতে ফেলে। এটি প্রাকৃতিক জন্মের লাভজনক দিকগুলোও নষ্ট করে ফেলে। যেমন— শিশু মায়ের প্রসব রাস্তা দিয়ে বের হওয়ার ফলে তার শরীরে কিছু ভালো ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করতে পারে, যা তার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের ফলে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সে যেতে পারে না। এছাড়া মায়ের বুকের দুধ পান করার জন্য মায়ের সঙ্গে শিশুর যে শারীরিক নৈকট্যে আসা দরকার, সেটি প্রয়োজনের তুলনায় দেরিতে ঘটে।
সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হচ্ছে স্বীকৃত ধাত্রীর অভাব, যারা প্রাকৃতিক জন্মদানে সাহায্য করার জন্য সর্বচ্চ চেষ্টাই কেবল করে না, বরং ব্যস্ত চিকিৎসকদের বোঝাও অনেকাংশে কমিয়ে দেন। বাংলাদেশে এখন কেবল আড়াই হাজার ধাত্রী রয়েছেন, সাম্প্রতিক একটি স্বাস্থ্যখাত পর্যালোচনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিমাণের মাত্র এক-দশমাংশ। এই অভাব পূরণের জন্য ইউএন পপুলেশন ফান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে সেভ দ্য চিলড্রেন।
সারাবাংলা/জেএ/টিআর
টপ নিউজ প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার প্রসূতি সিজারিয়ান সিজারিয়ান ডেলিভারি