সেই সরকারি হাসপাতালে বিদেশি চিকিৎসক আনার অনুমতি স্থগিত
১৯ জুন ২০১৯ ২৩:০৯ | আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ২৩:১৮
ঢাকা: চিকিৎসকদের প্রতিবাদের মুখে উত্তরায় অবস্থিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে বিদেশি চিকিৎসকদের এনে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি স্থগিত করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৯ জুন) বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রার ডা. জাহিদুল হক বসুনিয়া কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বরাবর এই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এ চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককেও (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ইস্যু করা চিঠির মাধ্যমে যেসব বিদেশি চিকিৎসকগদের চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তা স্থগিত করা হলো। এ বিষয়ে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জরুরিভিত্তিতে বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অবহিত করা হচ্ছে।
এর আগে, গত ৯ জুন তিন জন বিদেশি চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালকে। আগামী ২২ ও ২৩ জুন ওই তিন চিকিৎসক রোগী দেখবেন— এমন একটি বিজ্ঞাপনও প্রকাশ পায়। এরপরই এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান চিকিৎসকরা। সরকারি একটি হাসপাতালে যেন বিদেশি চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া না হয়, সে আবেদন জানিয়ে কার্ডিয়াক সার্জনন্স সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ডা. আশ্রাফুল হক বিএমডিসি’তে চিঠি পাঠান।
ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশের একটি সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের কার্যক্রম বিধিবদ্ধ কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। সরকার যেখানে বিশেষায়িত সেবা ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ পর্যায়ে কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ প্রতিষ্ঠা, প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ, প্রয়োজনীয় ও অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার নির্মাণের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে, সেখানে এ ধরনের কার্যক্রম অত্যন্ত দুঃখজনক।
জানতে চাইলে ডা. আশ্রাফুল হক সারাবাংলাকে বলেন, আমরাও দেশের বাইরে বিভিন্ন সেমিনারে যোগ দেই, লেকচার থাকে। আমরা কিন্তু তাদের দেশে চাকরি করতে পারব না। প্রযুক্তি হয়তো আনা যায়, প্রশিক্ষণও লেনদেন হয়। কিন্তু বিদেশি একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যানারে দেশের একটি সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখা হবে— এই বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।
ডা. আশ্রাফুল বলেন, যেহেতু আমি কার্ডিয়াক সার্জনন্স সোসাইটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক, সেই সূত্রে বিএমডিসি’র সভাপতি, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। বিএমডিসি’তে চিঠিও দিয়েছি। আমরা বলেছি, এভাবে ফলাও করে বিদেশি একটি প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যানারে দেশের সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার এমন বিজ্ঞাপন যৌক্তিক নয়। তারা হয়তো বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন বলেই স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
‘কেউ সেবা দিতে চাইলে সব ধরনের প্রসিডিউর মেনে আসতে পারেন। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের অধীনে আরেক দেশের বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালের ব্র্যান্ডিং হবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না,— বলেন ডা. আশ্রাফুল।
সারাবাংলা/জেএ/টিআর
অনুমতি স্থগিত কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল টপ নিউজ বিএমডিসি বিদেশি চিকিৎসক