Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শত ক্লান্তি ভুলেও ঘরমুখী ঈদযাত্রা


৪ জুন ২০১৯ ০২:০৭ | আপডেট: ৪ জুন ২০১৯ ০২:৩৬

ঢাকা: স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে নাড়ির টানে বাড়ি ছুটছে নগরবাসী। বাস-ট্রেন-লঞ্চ ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়িতে গ্রামের উদ্দেশ্যে লাখো মানুষ ছাড়ছে রাজধানী শহর।

সোমবার (৩ জুন) সৌদি আরবে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল মঙ্গলবার (৪ জুন) দেশটিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। অন্যদিকে মঙ্গলবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় বাংলাদেশে বৈঠকে বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি। এদিন চাঁদ দেখা গেলে বুধবার দেশে ঈদুল ফিতর পালিত হবে।

বিজ্ঞাপন

এ কারণে সোমবার (৩ জুন) অফিস শেষ করে বাড়ির দিকে রওয়ানা হয়েছেন অনেকেই। এ দিন দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলী, সায়দাবাদ, মহাখালী বাস টার্মিনাল ও সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালে ছিল মানুষের ঢল।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকেই সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভীড় বাড়তে থাকে। যাত্রীদের ভিড়ে পল্টুনে তিল ধারণের ঠাই ছিল না। এমনকি সদরঘাটের লঞ্চ টার্মিনালের ভিড় শেষ পর্যন্ত গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কে যানজটের সৃষ্টি করে। নদীর মাঝে রাখা লঞ্চগুলো ঘাটে নোঙ্গর করার আগেই ভরে যাচ্ছে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ছেড়ে দিতে হয়েছে।

সড়ক পথে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও রেলের শিডিউল বিপর্যয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে রেলপথের যাত্রীরা। ঈদযাত্রার অন্যান্য দিনের মতো সোমবারও কমলাপুর স্টেশনে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। ঈদযাত্রায় শত ভোগান্তি-দুর্ভোগ থাকলেও সবার চোখে-মুখেই ছিল দ্রুত বাড়ি যাওয়ার আকুলতা। প্রতিটি ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকেও শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত আসনে বসতে পেরে খুশি যাত্রীরা। কমলাপুর থেকেই যাত্রী পরিপূর্ণ হওয়ায় বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ছাদে ওঠা ছাড়া কোন বিকল্প ছিল না।

বিজ্ঞাপন

মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। বিগত দিনগুলোতে কিছুটা ফাকা গেলেও আজ হঠাৎ করেই যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিকাল চারটার পর থেকে দলে দলে মানুষ টার্মিনালে আসতে শুরু করে। যাত্রীর তুলনায় টার্মিনালে বাস কম থাকায় ভিড়ের মাত্রা বাড়তেই থাকে। এছাড়া গাবতলী বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। টার্মিনালের ভেতরে প্রতিটি কাউন্টারে যাত্রীদের ব্যাপক আনাগোনা ছিল। অধিকাংশ কাউন্টারে তাৎক্ষণিক বাসের টিকিট মিললেও যাত্রীদের চাপ থাকায় ভাড়া একটু বেশিই গুনতে হয়েছে।

বাস টার্মিনাল ছাড়াও কল্যাণপুর, শ্যামলী, আসাদগেট ও রাসেল স্কয়ার এলাকায় হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, এসআর ট্রাভেলস, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, দেশ ট্রাভেলস, ঈগল পরিবহন, গ্রীণ লাইন, টিআর ট্রাভেলসহ ভালো মানের বাসগুলোর কাউন্টারে ব্যাপক যাত্রী ছিল। যদিও এসব বাসের টিকেট আগেই সংগ্রহ করা ছিল তাদের।

উত্তরবঙ্গের গাড়ির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন বগুড়ার সাইফুর রহমান। তিনি জানান, অফিস শেষ করে বের হতে একটু দেরি হওয়ায় এই ভিড়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে। দুপুরেও বেশ ফাকা ছিল। বিকাল চারটার পরই ভিড় বাড়তে থাকে। এখন যেভাবেই হোক বাড়িতো যেতে হবে। সে চেষ্টাই করছি।

একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, ঈদে বাড়ি যেতে দুপুরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছেন। কিন্তু বাস টার্মিনালে পৌছতেই তার ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। বনশ্রী থেকে মহাখালী আসতে কোন গাড়ী না পাওয়ায় অনেকটা বিলম্ব হয়ে যায়। বাসের টিকেট আগেই সংগ্রহে থাকায় টার্মিনালে এসে তেমন ঝামেলায় পড়তে হয়নি।

একতা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার রফিকুল জানান, আজ বিকাল থেকেই হঠাৎ করে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। তিনি বলেন, আমরাও জানতাম। আজকের অফিস শেষ হলে ভিড় বাড়বে। এজন্য আমাদের পক্ষ থেকেও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। তারপরও হঠাৎ ভিড় হওয়ায় কিছুটাতো এলোমেলো হবেই।

এদিকে দূরপাল্লার গাড়ি ঠিকমত পাওয়া গেলেও বাসা থেকে টার্মিনালে পৌছতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের। নির্ধারিত ভাড়া চেয়ে তিনগুণ ভাড়া বেশি দিয়ে গন্তব্যে পৌছতে হয়েছে।

দীর্ঘ সময় পর দু একটি গাড়ী আসলেও তা ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। গাড়ী না পেয়ে অবশেষে দীর্ঘ পথ রিকসা করেই রওয়ানা হয়েছে।

এমনই একজন শরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, দেড় ঘন্টা ধরে দাড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাচ্ছি না। সিএনজি পেলেও তিন চারগুণ বেশি ভাড়া চায়। অবশেষে কিছু না পেয়ে কয়েকজনে মিলে পিকআপে উঠে সদরঘাটের উদ্দেশ্য রওয়ানা হয়েছে।

বরিশাল যাবেন রানা। তিনি জানান, অফিস থেকে বের হয়েই ব্যাগ নিয়ে বের হয়েছি কিন্তু রাস্তায় এসে দেখি গাড়ি নাই। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে বাড্ডা থেকে সাড়ে তিনশ টাকা দিয়ে মোটর বাইকে উঠেছি। কয়টা নাগাদ পৌছতে পারবো জানি না। শরিফুল, রানার মত শত শত মানুষ গাড়ীর অপেক্ষায়। তারপরও সবার অপেক্ষার পালা শেষ হবে, শত ক্লান্তি ভুলে বাড়ি পৌছাতে পারলেই।

সারাবাংলা/ এজেডকে/এসবি

ঈদ যাত্রা ঈদুল ফিতর ঢাকা সদরঘাট

বিজ্ঞাপন

চলে গেলেন প্রবীর মিত্র
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর