Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আম-ধানের ক্ষতির শঙ্কায় রাজশাহীর কৃষক


৩ মে ২০১৯ ১৪:১৪ | আপডেট: ৩ মে ২০১৯ ১৫:১৮

রাজশাহী: ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে মাঠের পাকা ধান ও আমের ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন রাজশাহীর কৃষক ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা। ভয়ে আছেন স্থানীয় লিচু বাগান মালিকরাও। ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের ক্ষতি ঠেকাতে কেউ কেউ মাঠের আধা-পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন।

ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ার পর থেকে শুক্রবার (৩ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহীতে বৃষ্টি হয়েছে।স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই বৃষ্টি। যার পরিমাণ দশমিক ৬ মিলিমিটার।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় আম চাষিরা জানিয়েছেন, গাছের আম পাকতে আরও সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে। ফলে, ঝড়ের কারণে আম ঝরে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।

আম চাষি জহুরুল জানান, তার একটি আম বাগান রয়েছে। এ বছর আমের ভালো ফলনও হয়েছে। আম পুরোপুরি পাকতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে ঝড়ের কারণে আম ঝরে পড়তে পারে। এতে করে তার কয়েক লাখ টাকা ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি।

জেলার গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ি এলাকার কৃষক বাবু জানান, তিনি এ বছর ১৩ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ধান কাটতে সপ্তাহ খানেক লাগবে। যদি ঝড় বয়ে যায় তাহলে জমির পুরো ধান নষ্ট হয়ে যাবার আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দীন বলেন, এবার গাছে গাছে আম ধরেছে। আর কিছুদিন পরেই আম পাকতে শুরু করবে। ঝড়ের প্রভাবে আমের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

এ দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় রাজশাহীতে সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য দু’টি আলাদা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব সরকারি ও আধা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের’র সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ‘ঘূর্ণিঝড় ফণী’ মোকাবিলায় করণীয় শীর্ষক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জরুরি ওই সভা থেকে রাজশাহীর প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাধারণ মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে মাইকিং করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত ওষুধ ও শুকনো খাবার মজুদসহ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ইমামদের মাধ্যমে মহানগর ও জেলার প্রতিটি মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সবাইকে সতর্ক করার জন্য ইসলামী ফাউন্ডেশনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দক্ষদের সমন্বয়ে ২০ সদস্যের একটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এই বিশেষ টিম মহানগর ও ক্ষেত্রবিশেষ জেলায় কোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলায় কাজ করবে। রাজশাহীর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের বলেন, কোনো জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে দুর্যোগকালীন ব্যবস্থাপনা তৈরি এবং পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য নেসকো, যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য জেলা শিক্ষা অফিস, নদী ও বাঁধ পর্যবেক্ষণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া হয় ওই সভা থেকে।

সারাবাংলা/এসএম/এমএইচ/জেএএম

ঘূর্ণিঝড় ফণী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর