Monday 21 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অতিবৃষ্টি হলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা হবেই: সাঈদ খোকন


২৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৫৭ | আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:১৯

ঢাকা: আমাদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ততটা সক্ষম না, উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, ‘সামনে বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টি হলে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা তৈরি হবেই।’

শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থায় নানা সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ড্রেনের ভেতরটা পলিথিন আর বোতলে ভরা। এজন্য আমরা সবাই দায়ী। উন্নয়নমূলক কাজের ফলে মাটি দিয়ে ভরাট হচ্ছে ড্রেন। এ সমস্যা একদিনের সৃষ্টি নয়, বহুদিনের। তাই জলাবদ্ধতা হবে না, এটি শতভাগ বলা যাবে না। তবে খুব কম সময়ের মধ্যে যাতে পানি নেমে যেতে পারে সেজন্য কাজ করা হচ্ছে।’

মেয়র আরও বলেন, ‘গত চার বছরে কোন কোন এলাকায় পানি জমে প্রকট আকার ধারণ করে সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর শান্তিনগর, নাজিম উদ্দিন রোড, গণকটুলী, বংশাল ও সূত্রাপুরের বাংলাবাজার এলাকা রয়েছে।’ এছাড়া বিশ্বের সব বড় শহরেও অতি বৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের কোলকাতা ও নয়া দিল্লী, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, সৌদি আরবের রিয়াদেও জলাবদ্ধতার ‍সৃষ্টি হয়। তবে তারা যে কাজটি করে আবহাওয়া অফিসের আগাম বার্তা পেয়ে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। আমরা সেদিকে পিছিয়ে আছি।’

‘প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের কাজ হবে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই যাতে জলাবদ্ধ অংশের পানি সরানো যায়। আমাদের নাগরিকদের অনেক দায় রয়েছে। একটু সচেতন হলে এ দায় সহজেই এড়ানো যায়। চিপস খেয়ে প্যাকেট আমরা রাস্তায় ফেলছি। পানি খেয়ে বোতল ছুড়ে মারছি। ফলে রাস্তায় পানি নিষ্কাশনের মুখটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি নামলে সবাই দাঁড়িয়ে দেখে কখন সিটি করপোরেশন আসবে। মুখটা খুলে দিলেই পানি প্রবাহ বেড়ে যায় এবং পানি নিষ্কাশন হয়ে যায়। অফিসগুলো যদি বোতল পানির পরিবর্তে কাচের গ্লাস রেখে আধুনিক সিস্টেমে পানির ব্যবস্থা করে এবং পান করে তাহলে সারাবছর একদিকে টাকাও সেভ হয়, অন্যদিক সেই বোতলটি সড়কেও গেলো না। পানি নেমে যাওয়ার প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হলো না’—বলেন সাঈদ খোকন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘বর্ষণজনিত কারণে পানি নিষ্কাশনের মূল দায়িত্ব হচ্ছে ঢাকা ওয়াসার। আমরা সহযোগী হিসেবে কাজ করি মাত্র। ঢাকা ওয়াসাসহ আমাদের অনেক দূর্বলতা আছে। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সিটি করপোরেশন ও রাজউকের কতটুকু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সেটি আজ ভাববার সময় এসেছে।’

ঢাকার খালগুলো উদ্ধারে তেমন কোনো তৎপরতা নেই কেনো জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘খালের মালিক হলো জেলা প্রশাসন। আর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। আবার সেই খালে যাতে ময়লা না পড়ে বা পড়লেও তা পরিষ্কারের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। সেজন্য অনেক কিছু করার মানসিকতা থাকলেও হয়ে ওঠে না। যেকোনো একটা সংস্থাকে দিয়ে কাজ করালে হয়তো এ সমস্যার সমাধান হতো।’

এছাড়া পুরান ঢাকায় থাকা শত শত পলিথিনের কারখানা বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেই কেনো জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করা হয়। যেগুলো পরিবেশবান্ধব সেগুলো চলে আর যেগুলো পরিবেশ বান্ধব সার্টিফিকেট দেখাতে পারেন না সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোটি মানুষের শহরে কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্ষেত্রে আমাদের নাগরিকরা যদি সচেতন হয়ে এগিয়ে আসে তবে অনেক সহজ হয়ে যায় সবকিছু।’

নিজের ঘর থেকে সচেতনতা শুরু করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমে সন্তান, সহকর্মী, প্রিয়তমা, বন্ধু, পথচারী এভাবে ছোট ছোট আকারে তৈরি হতে হবে। একদিন দেখা যাবে সড়কে কেউ টিস্যুও ফেলছে না। বোতল ছুড়ে মারছে না। এখন রাতভর পরিষ্কার করেও কূল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। বড় কষ্টের কথা হলো, আমাদের ড্রেনগুলো পরিষ্কারের সময় দেখলে হতাশা বাড়ে। সেখানে দেখা যায়, লক্ষ লক্ষ বিভিন্ন ধরনের বোতল জমে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমআই

জলাবদ্ধতা রাজধানী

বিজ্ঞাপন

এনসিপির ‘শৃঙ্খলা কমিটি’ গঠন
২১ এপ্রিল ২০২৫ ০০:০৭

আরো

সম্পর্কিত খবর