এশিয়ার একমাত্র পাথরের জাদুঘর!
২৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৯:১৭ | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:৫৯
শামীম হায়দার, অতিথি লেখক
পঞ্চগড়:পাথর দিয়ে নয়, পাথর নিয়ে গড়ে উঠেছে জাদুঘর। উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড় জেলায় গড়ে ওঠা বিশেষ এ জাদুঘরটির নাম রকস মিউজিয়াম। এটি শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো এশিয়ার মহাদেশের একমাত্র পাথরের জাদুঘর।
বিচিত্র সংগ্রহ নিয়ে গড়ে ওঠা এ জাদুঘরটিতে আছে প্রায় এক হাজার প্রত্নতাত্ত্বিক ও লোকজ উপাদান। আছে প্রায় ২ কোটি বছর আগের প্রাচীন সিলিকা পাথর, কঠিন শিলা, স্বচ্ছ কোয়ার্জাইট।
বিশেষ এক ধরনের পাথর রয়েছে এখানে, যার নাম পৃথুরাজ। ১৪০০ বছর আগে গাছের গুড়ি থেকে তৈরি হয়েছিল এ পাথর। সে সময় এটি ব্যবহার হত ভবন নির্মাণের কাজে।
ক্ষুদ্র, মাঝারি, বৃহৎ এবং নানা রং ও বৈশিষ্ট্যের শত শত পাথর রয়েছে এ রকস মিউজিয়ামে।জাদুঘরে প্রবেশ মাত্রই সবার নজর কাড়ে গাড় কালো রঙের দু‘টি ডিঙি নৌকা। করতোয়া নদী খনন করে প্রাচীন ডিঙি দু‘টো সংগ্রহ করা হয়।
কিছু কিছু পাথরে সুপ্রাচীন আমলের খোদাই করা নানা সাংকেতিক চিহ্নের দেখা মেলে। দেখা মেলে, নদীর তলদেশের বালি ও কাদা থেকে সৃষ্ট পাথরের।
এখানে রয়েছে গভীর সমুদ্র থেকে সংগ্রহ করা কয়েক ধরনের প্রবাল, ২০০ বছর আগে কাঠের তৈরি পানের বাটা।
পঞ্চগড় জেলার সরকারী মহিলা কলেজে ১৯৯৭ সালের ১ মার্চে যাত্রা শুরু হয় এ রকস মিউজিয়ামের। ওই প্রতিষ্ঠানের সে সময়কার অধ্যক্ষ নাজমুল হকের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠে স্বতন্ত্র এই যাদুঘরটি।
কলেজের একটি দোতলা ভবনকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে এ রকস মিউজিয়াম। ভবনটির সামনের উন্মুক্ত জায়গাটুকুও ব্যবহার করা হয়েছে প্রদর্শনীর জন্য।
প্রতিদিনই নানান জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান এ রকস মিউজিয়ামে। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ছাড়াও নানা শ্রেণী ও পেশার মানুষ আসেন এখানে।
জাদুঘরটির জন্য তেমন কোন কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কলেজের শিক্ষকদের আন্তরিক সহায়তায় চলছে এটি। তবে জাদুঘরটির দেখা-শোনার জন্য রাখা কেয়ারটেকার তবিবুর রহমান সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখেন। বলা যায় তিনিই দর্শকদের গাইডের ভূমিকা পালন করেন।
সরকারি সহায়তা পেলে মফস্বল শহরের চিরায়ত ব্যতিক্রম ও অনেকটা অপেশাদার ছোঁয়ার এ জাদুঘরটি হয়ে উঠতে পারে শিক্ষা, পর্যটন ও সাংস্কৃতির এক মিলন স্থান।
শামীম হায়দার, প্রেস সেক্রেটারি টু চেয়ারম্যান, জাকের পার্টি
সারাবাংলা/এসআরপি/এসএইচ/জেডএফ