ছাত্রলীগের বিক্ষোভে ‘অচল’ চবি
৭ এপ্রিল ২০১৯ ১১:০৭ | আপডেট: ৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:০৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিক্ষোভের কারণে সকাল থেকে শাটল ট্রেন পৌঁছেনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ল (চবি) ক্যাম্পাসে। পরিবহন পুলের বাসের চাকা ফুটো করে দেওয়া হয়েছে, শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী কোনো যানবাহনও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ক্যাম্পাসের মূল ফটক বন্ধ করে ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী বিক্ষোভ করছেন। তাদের বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চবি।
রোববার (৭ এপ্রিল) সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গত ২ এপ্রিল চবি শাটল ট্রেনভিত্তিক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেফতার ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা বিক্ষোভ করছেন।
জানা গেছে, রোববার সকালে চট্টগ্রাম শহর রেলস্টেশন থেকে শাটল ট্রেনের লোকোমাস্টারকে তুলে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ট্রেনের হোস পাইপও তারা কেটে দেন। ফলে শাটল ট্রেনটি স্টেশন ছাড়তে পারেনি। পরের দুইটি শাটল ট্রেনও আর ছাড়েনি চট্টগ্রাম শহর থেকে। ফলে শাটল ট্রেনে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারেননি।
এদিকে, চবি পরিবহন পুলে গিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেশ কয়েকটি বাসের চাকা ফুটো করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ফলে শহর থেকে কোনো বাস শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। আবার সকাল ১০টা থেকে ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী চবি ক্যাম্পাসের মূল ফটক বন্ধ করে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তারা শিক্ষকদের বহনকারী কোনো যানবাহনসহ কিছুই ঢুকতে দিচ্ছেন না।
চবি প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, ক্যাম্পাসে কোনো ক্লাস হচ্ছে না। তবে পরীক্ষা যেগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে অবশ্যই নেওয়া হবে।
এর আগে, গত ২ এপ্রিল শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ সিএফসি ও বিজয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন, আটক হন ছয় জন। পরে আটক ছয় জনের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই ছয়জনের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করছে ছাত্রলীগ। তাদের বিভিন্ন দাবির মধ্যে রয়েছে— কারাগারে থাকা ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা অস্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি; চবি প্রক্টরের পদত্যাগ; স্থানীয় হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলালুদ্দীন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরের অপসারণ এবং ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার।
চবি ছাত্রলীগের বর্তমান কোনো কমিটি নেই। তবে বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারীরা বিক্ষোভ করছেন বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুজন সারাবাংলাকে বলেন, ছাত্রলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করে আসছে। এজন্য নেতা হিসেবে তৃণমূলের কর্মীদের সব ধরনের আন্দোলনে আমাদের নীতিগত সমর্থন আছে।
চবি প্রক্টর জানিয়েছেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন আছে।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর