নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: প্রথমবারের মতো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের এক হাজার ৩৯৫টি দলকে হারিয়ে ২০১৮ সালের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ এই খেতাব অর্জন করেছে।

বেস্ট ইউজ অব ডেটা ক্যাটাগরিতে শীর্ষ চারে অবস্থান করে নেওয়া ক্যালিফোর্নিয়া, কুয়ালালামপুর আর জাপানের দলকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দল ‘টিম অলিক’। নিয়ম অনুযায়ী ছয়টি ক্যাটাগরির ছয়টি চ্যাম্পিয়ন দল নাসায় যাওয়ার এবং শিক্ষানবিশ হিসেবে কিছুদিন কাজ করার সুযোগ পাবে।

রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে বিশ্বের ৭৯ টি দেশের প্রায় দুই হাজার ৭২৯টি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের দুইটি ক্যাটাগরির শীর্ষ চারে উঠে আসে বাংলাদেশ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া টিম অলিকের ‘লুনার ভি আর প্রজেক্ট’ টি মূলত একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অ্যাপ্লিকেশন, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী চাঁদে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা পেয়ে থাকেন।

টিম অলিক নাসার বিভিন্ন রিসোর্স থেকে থ্রিডি মডেল ও তথ্য সংগ্রহ করে, নাসা আপোলো ১১ মিশন এর ল্যান্ডিং এরিয়া ভ্রমণ, চাঁদ থেকে সূর্যগ্রহণ দেখা এবং চাঁদকে একটি স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে আবর্তন করার তিনটি ভিন্ন পরিবেশকে ভার্চুয়ালভাবে তৈরি করেছে।

নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০১৮ এ বাংলাদেশের এই সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম।

প্রতিক্রিয়ায় মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মিত হচ্ছে আমাদের তরুণদের হাত ধরে। তরুণদের নিয়ে গড়া শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দল টিম অলিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব অর্জন করেছে। কয়েক বছর ধরেই বেসিস ও বেসিস স্টুডেন্টস ফোরাম এ আয়োজন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায়  বাংলাদেশের দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমি টিম অলিক এবং বেসিসকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এ অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার আরেকটি অনন্য দৃষ্টান্ত।’

বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘এ বছর আমাদের লক্ষ্যই ছিল গত তিন আসরের তুলনার ভালো করার। প্রথমবারের মতো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের খেতাব প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে বড় অর্জন। আমরা বেসিস থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে যাত্রা অব্যাহত রেখেছি, এ অর্জন আমাদের প্রচেষ্টার পথে আরেকটি বড় মাইলফলক। আমি বাংলাদেশের নাম বিশ্ব দরবারে আরো উঁচুতে আসীন করার জন্যে টিম অলিককে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

টিম অলিকের দলনেতা আবু সাবিক মাহদি কৃতজ্ঞতা জানান তাদের মডারেটর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী এবং বেসিসের প্রতি। তাদের প্রতি বাংলাদেশের যে প্রত্যাশা তা পূরণে কাজ করার কথাও জানান তিনি।

বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আয়োজিত এই চ্যালেঞ্জের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এবার দুই হাজার প্রকল্প থেকে বাছাই করে সেরা ৪০টি প্রকল্প নাসার জন্যে মনোনীত করা হয়। বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্টগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন

টিম অলিক নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা