‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের স্বত্ব লিজ দেওয়া হয়নি’
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১৮ | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:২৩
।। স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট ।।
ঢাকা: দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর স্বত্ব কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেওয়া হয়নি বা কারও কাছে বিক্রি করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, এটি জাতীয় সম্পত্তি। এই স্যাটেলাইটের স্বত্ব কোনো কোম্পানি বা ব্যক্তির নামে লিজ দেওয়ার যেসব তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে, তা সত্য নয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদের বৈঠকে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে ফখরুল ইমাম বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবর আসছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের স্বত্ব বেক্সিমকো ও অন্য একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করা আছে। কেউ এ স্যাটেলাইটের সুবিধা নিতে চাইলে এই দু’টি কোম্পানির কাছ থেকে তা কিনতে হবে। এ তথ্য সঠিক কি না, জানতে চান তিনি। এ প্রশ্নের জবাবেই তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী জানান, এ তথ্য সত্য নয়।
বাংলাদেশ মোবাইল ও ল্যাপটপ বানাচ্ছে ও রফতানি করছে
সরকারি দলের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী সংসদে বলেন, ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার বানাবে এবং তা বিদেশে রফতানি করবে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশ নিজেই মোবাইল ও ল্যাপটপ বানাচ্ছে ও রফতানি করছে। এখন আর মোবাইল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয় না। এরই মধ্যে উন্নত মানের মোবাইল ফোন উৎপাদনের জন্য ছয়টি কারখানা চালু হয়েছে। আরও ছয়টি মোবাইল ফোন কারখানা অবিলম্বে চালু হবে। অনেক দেশই এখন বাংলাদেশকে ঠিকানা হিসেবে নিচ্ছে। এ দেশ থেকে যন্ত্রাংশ তৈরি করে তারা বিদেশে নিয়ে যাবে। স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানি এখন বাংলাদেশে এসে মোবাইল ফোন সংযোজন করে।
দুই মাসের মধ্যে মাদারবোর্ড তৈরি শুরু হবে
সরকারি দলের সদস্য গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্সের আরেক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা এ দেশে কম্পিউটারের মাদারবোর্ড উৎপাদনের চেষ্টা করছি। আমরা ল্যাপটপ তৈরির যে কারখানা চালু করছি, সেখানেই মাদারবোর্ড তৈরি হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার, ট্যাব ও মোবাইল ফোনের মাদারবোর্ড তৈরি শুরু করবে। এর ফলে বাংলাদেশে উৎপাদিত এসব পণ্য আমদানি করা পণ্যের চেয়ে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ কম দামে পাওয়া যেতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সামান্য ভর্তুকি দিলে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের হাতে স্বল্প মূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস পৌঁছে দিতে পারবে বলে আশাবাদ জানান।
২০২৩ সালের মধ্যে সব স্কুলে ডিজিটাল ল্যাব হবে
ইসরাফিল আলমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব স্কুলে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। এসব ল্যাবে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে স্কুল ছুটির পরে অন্যদের জন্য উন্মুক্ত রাখতেও সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে, একই প্রশ্নকর্তার লিখিত প্রশ্নের জবাবে তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ হাজার ২৯৫টি ডিজিটাল সেন্টার তৈরি হয়েছে। এ জন্য ৪৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ৩২ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এসব সেন্টার থেকে ১০ হাজারেরও বেশি উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। উদ্যোক্তারা ৩৬৭ মিলিয়িন জনগণকে সরকারি-বেসরকারি ১৫০টি সেবা প্রদান করেছে। এর মাধ্যমে ৭৫ মিলিয়ন জন্ম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে, ৩ হাজার ৩শ সেন্টারে এজেন্ট ব্যাকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে, ৪ মিলিয়ন মোবাইল ব্যাকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এসব ডিজিটাল সেন্টারে সবার জন্য একটি ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা, ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান ও আমানত গ্রহণ, বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ, পাসপোর্ট বিল গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর