Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উত্তরাঞ্চলে আর নয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র  


২৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১৮:৩৩ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ ২২:৪৭

।। হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন করে আর কোনো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে না সরকার।  ভূগর্ভস্থ পানির আধার ঠিক রাখতেই নীতিগত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই তথ্য জানান।

দেশের উত্তরাঞ্চলকে কৃষিপণ্য উৎপাদনের অন্যতম ভাণ্ডার উল্লেখ করে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, কৃষিকাজের প্রয়োজনে ভূগর্ভস্থ জলাধারের পানি ব্যবহার করা হয়। এই অঞ্চলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলে এই জলাধারের পানি কৃষিকাজের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। তাই জলাধার যেন নষ্ট না হয়, সে কারণেই  এই অঞ্চলে নতুন করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিমুখে নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র না করতে আমরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  মূলত কৃষি উৎপাদনে যেন ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারে কোনো সমস্যা না হয়, এজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভূগর্ভস্থ পানির জলাধার ঠিক রাখতে এরই মধ্যে রংপুরের কুড়িগ্রামে কয়লাভিত্তিক একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের মালিকানাধীন এই কেন্দ্র দেশের অন্য জায়গায় নির্মাণের চিন্তাভাবনা চলছে।

সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি ও যৌথ বিনিয়োগে মোট ১৮টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ৩৯২ মেগাওয়াট। এছাড়া সরকারি পর্যায়ে নির্মিতব্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের কাজ। এরইমধ্যে কেন্দ্রটির ৩০ ভাগের ওপর কাজ শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সিএমসি এই কেন্দ্রের  সমান অংশীদার। দুই কোম্পানি মিলে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) গঠন করে।  প্রকল্পটির মালিক বাংলাদেশ ও চীন সরকার।  চীনের এক্সিম ব্যাংক প্রকল্পটিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে।  বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১৯ সালে উৎপাদনে আসবে।

বিজ্ঞাপন

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মালিক বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার লিমিটেড (এনটিপিসি)। বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি (বিআইএফসিএল) ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। এরইমধ্যে কেন্দ্রটির টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ চলছে।  শিগগিরই কেন্দ্রের মূল পাইলিংয়ের কাজ শুরু হবে। এ ধরনের একটি কেন্দ্রের জন্য সাড়ে সাত থেকে আট হাজার পাইলিং প্রয়োজন হয়।  কেন্দ্রটিতে ঋণ সহায়তা দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক।

সরকারি প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ মাতারবাড়িতে নির্মাণ করছে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র।  জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) প্রকল্পটিতে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। এছাড়া এস আলম গ্রুপ ৬১২ মেগাওয়াট করে দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে।

সারাবাংলা/এইচএ/ এমএনএইচ/

বিদ্যুৎকেন্দ্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর