Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর হবে কবে?


১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:০৫ | আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১১

।। সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ।।

ঢাকা: সবচেয়ে বেশি নাড়া দেওয়া, সব শ্রেণির মানুষের প্রশংসা কুড়ানো কোনো সামাজিক আন্দোলনের কথা যদি বাংলাদেশের মানুষ মনে রাখে তবে তা হবে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন।

গত বছর বাসের ধাক্কায় স্কুল পড়ুয়া দুইজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল সারাদেশে। গতবছর ২৯ জুলাই ওই দুর্ঘটনা হওয়ার পরে ছাত্র বিক্ষোভের খবর মূলত সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রথম কয়েকদিন স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও পরবর্তীতে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হয় ঢাকায়।

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা আর পরিবহন খাতের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার্থীদের নানামুখি দাবির ‘দ্রুত ও আইনানুযায়ী বাস্তবায়নের’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের আন্দোলন বন্ধ করতে সফল হয় সরকার। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা বড়দের চোখ খুলে দিয়েছে, বুঝিয়ে দিয়েছে কীভাবে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হয়।

বাংলাদেশে যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা হয় এবং এতে করে মানুষ মারা যায় ও পঙ্গু হয়, তা বিশ্বে বিরল। তাই মানুষ এখন আর এসবকে দুর্ঘটনা বলতে রাজি নয়। বলা হচ্ছে, পথে পথে খুন হচ্ছে প্রতিদিন। কিন্তু কোনো প্রতিকারই মানুষ কখনো পায়নি। কলেজ ছাত্র রাজীব, গৃহকর্মী রোজিনা, কিংবা স্কুল শিক্ষার্থীকে মেরে ফেলে, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পায়েলক গাড়ি থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে, ইট দিয়ে নাক মুখ থেঁতলে নদীতে ফেলে হত্যা করলেও পরিবহন শ্রমিকদের কিছু হয় না। পরিবহন খাতের পেশিশক্তিসম্পন্ন মালিক-শ্রমিকরা আজীবন ক্ষমতা দেখিয়েছে। গত দশটি বছর যেন আরও বেশি দেখিয়েছে। তারা রাস্তায় নেমে মানুষের, তথা জাতির মুখে কালো মোবিল লাগিয়ে দিয়েও নিরাপদে থেকেছে। সমালোচনা বা বিরোধিতা নিয়ে তারা মোটেই চিন্তিত ছিলেন না। কারণ ক্ষমতার কেন্দ্রে বসে এসব নৈরাজ্যকে সহযোগিতা দেওয়ার লোক ছিল তাদের। সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন মন্ত্রী, মালিক সমিতির সভাপতি ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। এমন বাস্তবতায় সত্যিকার কোনো আইন বা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি সরকারের পক্ষে। আর বাংলাদেশের পরিবহন খাতই একমাত্র খাত যেখানে মালিক-শ্রমিক ভয়ঙ্কর ঐক্য বিরাজমান নৈরাজ্যের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার জন্য।

বিজ্ঞাপন

এরশাদ জামানায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে রাজপথে যেমন ইচ্ছা তেমন করার অধিকার আদায়ের পর থেকে পরিবহন খাতের সব অন্যায় জাতিকে সইতে হচ্ছে। এবারের নতুন মন্ত্রিসভায় পরিবহন খাতের আলোচিত সেইজন নেই। প্রধানমন্ত্রী সড়কে আর নৈরাজ্য চান না, আর দানবের কাছে সড়ক ছেড়ে দিতে চান না বলেই মনে হচ্ছে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন তার কাছে অগ্রাধিকার এখন সড়কে শৃঙ্খলা।

গতবছর ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে দুটো আইন সংসদে বেশ তড়িগড়ি করে পাস করা হয়। একই দিনে পাস হওয়া আইন দুটির একটি হল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অন্যটি সড়ক পরিবহন আইন। সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক সমাজ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগ জানালেও, প্রতিবাদ করলেও সরকার কারও কথা শোনেনি। দ্রুত আইনটি কার্যকর করেছে। তবে একইদিনে সংসদে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন এখনও কার্যকর করা হয়নি। সংসদে পাস হওয়া এই আইনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে সড়ক সংশ্লিষ্টরা অনেক কথা বললেও নতুন আইনকে প্রায় সকলেই স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে, মানুষের মুখে কাল মোবিল লাগানোর আন্দোলনের কারণে এখনও এই আইন কার্যকর হয়নি।

নির্বাচনের পর নতুন সরকার পথ চলতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই মন্ত্রিসভার গঠন থেকে শুরু করে প্রাথমিক বেশকিছু পদক্ষেপে সুশাসন শুরুর ইঙ্গিত আসছে। তাই এখন সকলের চাওয়া প্রায় এক যুগ পর সড়ক সংশ্লিষ্ট একটি আইন নিশ্চয়ই এবার আলোর মুখ দেখবে।

সারাবাংলা/একে

নিরাপদ সড়ক আন্দোলন সড়কে শৃঙ্খলা

বিজ্ঞাপন

শেষ কবে এতটা নিচে ছিলেন কোহলি?
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৪৪

মুম্বাই যাচ্ছেন শাকিব খান
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৫

আরো

সম্পর্কিত খবর