মারা গেলেন জর্জ বুশ সিনিয়র
১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:২৭ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:১৩
।।আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ পরলোকগমণ করেছেন। মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ৯৪ বছর। তার ছেলে জর্জ বুশ এক ঘোষণায় তার মৃত্যুর কথা জানিয়েছেন।
জর্জ বুশের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১০.১০ মিনিটে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
চলতি বছর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সিনিয়র বুশ। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী বারবারা বুশ মৃত্যুবরণ করেন।
৪৩তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ তার পিতার মৃত্যু নিয়ে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, জেব, নেইল, মার্ভিন, ডোরো ও আমি শোকাহত ঘোষণায় জানাচ্ছি যে, আমাদের পিতা অবিস্মরণীয় ৯৪ বছর জীবন পার করার পর শুক্রবার মারা গেছেন।
বুশ বলেন, তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ চারিত্রিক গুণের অধিকারী একজন মানুষ ও কোন পুত্র বা কন্যার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পিতা।
এদিকে, সিনিয়র বুশের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন তার রিপাবলিকান সতীর্থ ও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, সিনিয়র বুশ ছিলেন অত্যাবশ্যক সত্যতা, অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা এবং নিজের বিশ্বাস, দেশ ও পরিবারের প্রতি অবিচল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একজন মানুষ।
কে ছিলেন সিনিয়র বুশ?
৪১তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশ বিশ্বজুড়ে ‘সিনিয়র বুশ’ নামেও পরিচিত। তিনি ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের আমলে টানা দুইবার ভাইস-প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
বুশের আমলে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিমালা ব্যাপক প্রাধান্য পেয়েছিল। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে তার জনপ্রিয়তা রেটিং ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। কিন্তু তবুও ১৯৯২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বিল ক্লিন্টনের কাছে হেরে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি দেশীয় ইস্যু অবহেলা করেছেন। বিশেষ করে, ট্যাক্স বৃদ্ধি বিষয়ক একটি প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় তার জনপ্রিয়তা ব্যাপক হারে হ্রাস পায়।
বুশ রাজনীতিতে প্রবেশ করেন ১৯৬৪ সালে। তক্ষণ তিনি টেক্সাসে একটি জ্বালানি ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায়িক সাফল্য তাকে ৪০ বছরেরও কম সময়ে একজন মার্কিন লাখপতিতে পরিণত করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একটি যুদ্ধবিমানের চালক ছিলেন। কিন্তু ১৯৪৪ সালে এক অভিযান চালানোর সময় তার বিমানটি জাপানিদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়।
১৯৪৫ সালে তাকে নৌ-বাহিনী থেকে সম্মানজনক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর ১৮ বছর বয়সী বারবারা পিয়ের্সকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের বিবাহিত জীবন বারবারার মৃত্যু পর্যন্ত ৭৩ বছর স্থায়ী হয়। তারা ছয় সন্তানের জনক ও জননী।
বর্তমানে সিনিয়র বুশ পাঁচ সন্তান ও ১৭ নাতি-নাতনী ও দুই সহোদর রেখে গেছেন।
সারাবাংলা/ আরএ