Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আয়কর মেলা: হয়রানি না হওয়ায় সন্তুষ্ট করদাতারা


১৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৫০ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৮

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: এক ছাদের নিচে সব সেবা, কোনো হয়রানি ছাড়া জমা দেয়া যাচ্ছে আয়কর রিটার্নও। ব্যাংক বুথ ছাড়াও ই-পেমেন্টের মাধ্যমে অনলাইনেও জমা দেয়া যাচ্ছে আয়কর। করা যাচ্ছে ই-ফাইলিং। কর নিবন্ধন (ই-টিআইএন) নিতেও সময় লাগছে খুবই কম। যাবতীয় বিড়ম্বনা ছাড়া সহজে আয়কর জমা দিতে পেরে সন্তুষ্ট করদাতারা।

নবম আয়কর মেলার তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার মেলা ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ‘উন্নয়ন ও উত্তরণ, আয়করের অর্জন’স্লোগানে শুরু হওয়া এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ‘আয়কর প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় বিচার ও ধারাবাহিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ’।

মেলার সমন্বয়ক ও এনবিআর সদস্য জিয়া উদ্দিন মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেলার তৃতীয় দিনেও করদাতাদের সেবা নেয়া, নিবন্ধন নেয়া ও রিটার্ন জমা দেওয়ার ধারা অব্যাহত রয়েছে।’

মেলায় প্রথমবারের আয়কর জমা দিয়েছেন বেসরকারি এক ব্যাংকের কর্মকর্তা সোনিয়া রহমান। রিটার্ন জমা দেয়া শেষে মিরপুরের এই বাসিন্দা সারাবাংলাকে বলেন, আধা ঘন্টার মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে পেরেছি। এতো সহজে রিটার্ন জমা দেয়া যাবে ভাবতে পারিনি। মেলায় রিটার্ন জমা দিয়ে আমি খুবই খুশি।

সরকারী চাকুরিজীবী নুরুল হুদা (৫৯) ও দেলোয়ার হোসেন (৫৭) মেলায় রিটার্ন জমা দিতে এসেছিলেন। রিটার্ন দাখিল শেষে সারাবাংলাকে তারা বলেন, রিটার্ন ফরম পূরণ ছিল। মেলায় এসে মাত্র ১০ মিনিটেই তা জমা দিতে পেরেছি। কর দিতে পেরে সন্তুষ্ট মুখে তাদের ভাষ্য, দেশের জন্য একটা কিছু দিতে পারলাম।

কাঠালবাগানের বাসিন্দা আলী আজগর (৬৩) সারাবাংলাকে বলেন, মেলায় খুব একটা ভিড় নেই। ৫ মিনিটেই কাজ শেষ করতে পেরেছি। মেলায় কী সুবিধা পেলেন জানতে চাইলে সারাবাংলাকে তিনি বলেন, কর অঞ্চলগুলোতে গেলে খুঁটিনাটি ধরা হয়। মেলার মধ্যে করকর্মকর্তাদের হয়রানি থাকে না। মেলায় কেনো হয়রানি করে না, তা এনবিআর কর্মকর্তারাই বলতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

কর অঞ্চলের প্রতি অনীহা রয়েছে জানিয়ে সারাবাংলাকে আলী আজগর বলেন, কর অঞ্চলে গেলে তারা হয়রানি করে। ফলে মানুষ হয়রানির জন্য কর দিতে চায় না। মেলা শুরুর আগে নির্দিষ্ট ব্যক্তির মাধ্যমে করের টাকা পরিশোধ করতেন জানিয়ে আলী আরও জানান, মেলা শুরুর পর থেকে মেলাতেই কর দিচ্ছেন তিনি।

আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া শেষে গর্বের সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহা পরিচালক এম সাঈদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘করের আওয়াতায় পড়লে কর দিতে হবে। এটাই তো নিয়ম। ৮৬ সাল থেকে কর দিচ্ছি। মেলাতে ভালো পরিবেশ। এবারের মেলা আরও সুন্দর হয়েছে।’

ই-পেমেন্টের মাধ্যমেও কর দিচ্ছেন অনেক করদাতা। তাবু ১ এর ভেতরে ব্যাংক বুথের পাশেই ই-পেমেন্টের স্টল রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডর (এনবিআর) ওয়েবসাইট ব্যবহার করে খুব সহজেই জমা দেয়া যাচ্ছে আয়কর। এক্ষত্রে ২৮ টি ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যাবে। গেট ওয়ে পেমেন্ট সিস্টেম কিউ ক্যাশ এ সেবা দিচ্ছে।

কিউ ক্যাশের বুথে কর্মরত হাসান মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ঢাকায় এখন পর্যন্ত শতাধিক করদাতা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে আয়কর জমা দিয়েছেন। এনবিআরের অন্য এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, গত দুই দিনে ১১৯ জন করদাতা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে কর জমা দিয়েছেন। মেলায় এগিয়ে চলছে ই-ফাইলিংয়ের কার্যক্রমও। ই-ফাইলিং বলতে অনলাইনেই রিটার্ন জমা দেয়াকে বোঝায়। সেক্ষেত্রেও দুই শতাধিক রিটার্ন জমা পড়েছে।

এদিকে, ভিডিওর মাধ্যমে আয়করের বিষয়ে নানা তথ্য জানানো হচ্ছে। রিটার্ন ফরম পূরণ করার সময় অনেক করদাতাকে ভিজ্যুয়াল পদ্ধতিতে কর শিক্ষণের দিকে নজর দিতে দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে মেলার তৃতীয় দিনে হয় কর শিক্ষণ ফোরাম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৪০ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। তাদের কর বিষয়ে নানা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। তাদের মধ্যে বিজয়ী ১০ জনের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

বিজ্ঞাপন

মেলা চলছে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।

সারাবাংলা/ইএইচটি/জেএএম

আয়কর মেলা ই-টিআইএন রিটার্ন জমা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর