Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জলবায়ু পরির্তন মোকাবেলায় ক্ষয়-ক্ষতি পরিমাপ প্রয়োজন’


২৯ অক্টোবর ২০১৮ ২১:৫৬ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ২২:০৬

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতির মাত্রা নিরুপণ করতে বালাদেশে একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো দরকার। যে কাঠামো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি পরিমাপ, ক্ষতিপূরণ ও নীতিনির্ধারণে সহযোগিতা করবে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন ও দাবি আদায়ে সহযোগিতা করবে।

আজ সোমবার (২৯ অক্টোবর) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত একটি বহুপাক্ষিক আলোচনায় এমন কথা বলেন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও সরকারি কর্মকর্তাগণ। ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি’ বিষয়ক এই আলোচনায় অনেকগুলো গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন আয়োজকরা, যার মূল লক্ষ্য ছিল ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণে একটি জাতীয় কাঠামো তৈরিতে সহযোগিতা করা।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়-এর যৌথ উদ্যোগে দুর্যোগের ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণ এবং এর জন্য একটি জাতীয় কাঠামোর বিভিন্ন দিক নিয়ে একটি ধারণাপত্র তুলে ধরেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়-এর অতিরিক্ত সচিব সত্যব্রত সাহা। সেখানে তিনি বলেন, জাতিসংঘের কয়েকটি কয়েকটি প্রতিবেদনে বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০০৫ থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমাণ হতে পারে প্রায় ১২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশের জিডিপির ৫ শতাংশ। তবে এ ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান বিস্তারিত জানা, পরিমাপ করা, বোঝা ও দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামো দরকর। যে কাঠামোতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাপের পদ্ধতি ও নিরুপণসহ বিভিন্ন দিক থাকবে।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার (আইসিসিএডি)-এর পরিচালক ড. সালিমুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত প্রশমন ও অভিযোজন নিয়ে কাজ করেছে। তবে আসলেই কি পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হচ্ছে, তা নিয়ে এখন কাজ করা দরকার। সম্প্রতি আইপিসিসি প্রকাশিত ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযোজন বা প্রশমণের মাধ্যমে ক্ষয়-ক্ষতি পুরোপুরি নিরসন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট কাঠামো, যেটি ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ করবে।’

এরপরই ক্ষয়-ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণে প্রান্তিক পর্যাযের মানুষের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে একটি আলোচনাপত্র তুলে ধরেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশর জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের প্রধান তানজির হোসেন। যেখানে তিনি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে একজন সাধারণ মানুষের আর্থিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কি সমস্যা হচ্ছে তা নিরুপণ করা দরকার। যার আলোকে ধনী দেশসহ যারা জলবায়ু পরির্তনের জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারবো। একইসঙ্গে আমরা ক্ষয়-ক্ষতির প্রেক্ষাপটে জাতীয়ভাবে কী উদ্যোগ নিতে হবে তাও বুঝতে পারবো।’

দুর্যোগ পরবর্তীকালীন ক্ষয়-ক্ষতি ও প্রাণহানি বাংলাদেশের জন্য কঠিন বাস্তবতা বলে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মহাপরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম বলেন, ‘বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তৈরি করেছে দৃঢ় আইনি কাঠামো। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঝুঁকি ও আর্থ সামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণে এই সুনির্দিষ্ট জাতীয় কাঠামো ও নীতি প্রণয়ন প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশর অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঝুঁকিতে পড়ছে মানুষের স্বাস্থ্য, বাসস্থান, জমি ও নদী। এর একটি সঠিক হিসাব আমাদের থাকা উচিত। যাতে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণে সঠিক উদ্যোগ নিতে পারে এবং বৈশ্বিক জলবায়ূ সম্মেলনের মত বড় পরিসরে আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরতে পারি।’

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ক অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের গবেষণা বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণের জন্য বর্তমানে জাতীয় পর্যায়ে কোনো নীতি বা কাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। পাশাপাশি এই ক্ষয়-ক্ষতি বের করার জন্য আমাদের সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব রয়েছে। ইতোমধ্যে সরকারের নেতৃত্বে ক্ষয়-ক্ষতির কাঠামো তৈরির উদ্দেশ্যে প্রান্তিক মানুষ ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলে একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার। যেখানে ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ কাঠামো তৈরি এবং ক্ষয়-ক্ষতি বের করার জন্য একটি পাইলট প্রকল্পের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেএ/এমআই

অ্যাকশনএইড জলবায়ু পরির্তন

বিজ্ঞাপন

দেশপ্রেম ও মেধা পাচার
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৪

আরো

সম্পর্কিত খবর