Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘুষ ছাড়া সেবা মেলে না মোংলা ও বুড়িমারী বন্দরে: টিআইবি 


২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:২২ | আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:৪৬

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা ও এর কাস্টমস এবং বুড়িমারী স্থল বন্দরে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে বলে দাবি করে দুর্নীতি বিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছেন ঘুষ ছাড়া সেখানে কোনো প্রকার সেবা মেলে না।

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে টিআইবির কার্যালয়ে ‘মোংলা বন্দর ও কাস্টমস হাউজ এবং বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন: আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়ায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংস্থাটি এমন দাবি করে।

মোংলা ও বুড়িমারী বন্দরের সেবার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির সুস্পষ্ট তথ্য টিআইবির কাছে রয়েছে এমন দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ, শ্রমিক নেতাদের একাংশ, দালালদের একটি অংশের প্রভাব এবং যাদের ওপর দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ বা সুশাসন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব তাদের একাংশের যোগসাজশে এ দুর্নীতি হচ্ছে। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে কিন্তু দুর্নীতিবাজরা শাস্তি পায়নি। আমাদের দেশেও এমন নজির দরকার।

দুর্নীতি দমনে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদককে এখানেও কার্যকর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বন্দরের লোকদের  যোগসাজশের মাধ্যমে বন্দরে যে দুর্নীতি হয় তা কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। সুতরাং কর্তৃপক্ষ যদি দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, তাহলে তা সম্ভব। শুধু যেটা দরকার তা হলো সদিচ্ছার। যারা এই দুর্নীতির সঙ্গ জড়িত তদেরকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে বার্তা পৌছে দেওয়া যে দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হয়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে এ দুই বন্দর এবং কাস্টমস হাউজের ওপর পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপণ করেন  মো. খোরশেদ আলম ও মনজুর ই খোদা।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোংলা কাস্টম হাউজ থেকে ৩ হাজার ৯৯ কোটি টাকা এবং বন্দর থেকে ২২৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। আর বুড়িমারী কাস্টম হাউজ থেকে ৪৫ কোটি এবং বন্দর থেকে ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনে আমদানি-রফতানি প্রক্রিয়ায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমপক্ষে ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা নিয়মবহির্ভূত লেনদেন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এর মধ্যে শুল্ক স্টেশনে আমদানির ক্ষেত্রে ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা ও রফতানির ক্ষেত্রে ৩৪ লাখ টাকা। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আমদানির ক্ষেত্রে ৪৩ লাখ টাকা ও রফতানির ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা নিয়মবহির্ভূত আদায় করেছে। বাকি ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা মোটর শ্রমিকরা নিয়মবহির্ভুত ভাবে নিয়েছে।

অপরদিকে মোংলা কাস্টমস হাউজ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিয়মবহির্ভুত গাড়ী থেকে ৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, কন্টেইনার থেকে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং বাল্ক থেকে ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা নিয়েছে। আর মোংলা বন্দরের মাধ্যমে নিয়মবহির্ভুতভাবে আদায় করা হয়েছে ৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে গাড়ি থেকে ২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, কন্টেইনার থেকে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা এবং বাল্ক থেকে ৫৮ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বন্দরের এই দুর্নীতি আইনের চোখে প্রমাণিত না, যে কারণে আমরা এটাকে অভিযোগ বলছি। যারা প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতির শিকার হয়, নিজেরাও দুর্নীতির অংশীদার হয়ে যাচ্ছে তাদের তথ্য এবং অন্যান্য অংশীজন থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করেছি। আমাদের পদ্ধতি অনুযায়ী প্রমাণিত বিধায় আমরা এটাকে (দুর্নীতি) বলছি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএস/এমআই

টিআইবি দুর্নীতি

বিজ্ঞাপন

৭ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর